কলকাতার মেয়র তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমকে ‘মুসলিম’ বলে কটাক্ষই বিজেপি দলের একমাত্র অস্ত্র। এ প্রসঙ্গে কী বলছেন ফিরহাদ হাকিম? রাজনীতিবিদ ফিরহাদ ছাড়াও এক ব্যক্তিমানুষ হিসেবে কেমন তাঁর অস্তিত্ব ও পারিবারিক যাপন? সম্প্রতি এক সংবাদ মাধ্যমের লাইভ সাক্ষাৎকারে সেসম্পর্কেই জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় বাঙালি এই রাজনীতিবিদ জানিয়েছেন, তাঁর মা বাঙালি এবং শিক্ষিকার পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। এলাহাবাদে হিন্দিতে পড়াশোনা শেষ করে তাঁর মা সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েদের সামনের সারিতে আনার জন্য লড়াই করেছেন আজীবন। গার্ডেনরিচের মৌলানা আজাদ গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা উর্দু শিখেছিলেন শিক্ষার প্রয়োজনেই। শুধু তাই নয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের জীববিজ্ঞান পরীক্ষার উর্দু খাতা তিনিই দেখতেন।
মায়ের কথা উল্লেখ করে ফিরহাদ বলেন, “সারাজীবন স্কুলে পড়িয়েছেন আমার মা। অঙ্ক কষতে ভালবাসতেন। রাত জেগে অঙ্ক করতে দেখেছি মাকে। পরে অবশ্য লেখাপড়া ছেড়ে আমাদের মানুষ করার জন্য সংসারে মন দেন। আবার আমার বিয়ের পর বৌমার ঘাড়ে সব দায়িত্ব দিয়ে অঙ্ক কষার দিকে মন দেন। এমন শাশুড়ি এবং মা আমি আর কখনো দেখিনি।”
রাজনীতিই তাঁর ধ্যানজ্ঞান যদিও পেশায় ব্যবসায়ী ফিরহাদ হাকিম। যুবক অবস্থা থেকেই বন্ধুদের সাথে মিলেই ক্যানিংয়ে বরফকল তৈরি করেছিলেন। হার্ডওয়্যার ও স্নানের সরঞ্জামেরও দোকান রয়েছে তাঁর। যদিও একাধিক প্রতিকূলতার পরেও ব্যবসার জন্য রাজনীতি ছাড়েননি তিনি। এর জন্য ৩৭ বছরের বিবাহিত জীবনে বরাবর সমর্থন জুগিয়েছেন তাঁর স্ত্রী রুবি। এমনকি একসময় বাবা মায়ের তীব্র আপত্তির মুখেও বৌমাই তাঁদের বলেছিলেন, ‘ও আমায় ছেড়ে চলে যাবে, তবু রাজনীতি ছাড়বেনা।’
আজ যখন সাম্প্রদায়িক প্রশ্নে বারবার মেয়রের ‘ধর্ম তুলে’ কটাক্ষ করা হয়, তিনি ভীষণই দুঃখবোধ করেন। স্পষ্টতই বলেছেন, “আমার মামারবাড়ি এবং বাড়িতে কোনওদিন এসব আলোচনা হতে দেখিনি। আমাদের কাছে এগুলি খুবই সাধারণ বিষয়। বিজেপির বাড়বাড়ন্তর পরেই দেখলাম, মুখোপাধ্যায় হাকিম এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে!”