স্কুল কলেজের ক্যাম্পাসে হিজাব নিষিদ্ধ নয়, এমনটাই জানলো কর্ণাটকের রাজ্যসরকার। অথচ শুরু থেকে বহমান বিতর্কটাই চলে আসছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিয়ে। যেকারণে বানরের মতো একদল গামছা পরা ছাত্রদের লম্ফঝম্প! বিশিষ্ট লেখিকার প্রগতিশীল ভাষণ, ধর্ষণ নিয়ে কংগ্রেস নেতার আলটপকা মন্তব্য, তারা জানতেনই আলাপ আইনের কোন ধারায় কী বলা হয়েছে!
আদালতে স্বাভাবিক ভাবেই সেই প্রশ্নগুলো উঠেছে।
প্রথমদিকে রাজ্যের তরফে হিজাব ইসলামের আবশ্যিক পোশাকের অঙ্গ নয় এমনটা জানানো হলেও মঙ্গলবার আদালতের সওয়ালের মুখে রাজ্যসরকারের তরফে বলা হয়েছে –স্কুল কলেজের ক্যাম্পাসে হিজাব পরায় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে ক্লাস চলাকালীন ক্লাসের অভ্যন্তরে সেটি খুলে নিতে হবে।
কর্নাটকের প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্তি এবং অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়ে গঠিন বেঞ্চে রাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয় ‘সংবিধানের ১৯ নম্বর ধারায় হিজাব পরায় ছাড় দেওয়া হয়েছে এবং ১৯/২ ধারায় সেটি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।’ এই ধারার উল্লেখে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল নিজেই পরিস্কার জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে ধর্মনিরপেক্ষ চেহারা দেওয়ার চেষ্টায় করা হয়েছে। হিজাব পরে ক্যাম্পাসে আসতে বাধা নেই।
হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে ক্লাস চলাকালীন। এটা সব ধর্মের পড়ুয়াদের জন্য প্রযোজ্য।’
এখানেই দুটি দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে জ্বলজ্বল করছে। এক, উদুপির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি এবং মাণ্ড্য প্রি-ইউনিভার্সিটিতে গেরুয়া স্কার্ফ পরা শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভটা কি ক্লাসরুমে হিজাব পরে না ঢোকার জন্য হয়েছিল? যদি হয়েও থাকে, সেটা নির্ধারণ করবেন স্কুল কলেজের শিক্ষক ও অধ্যক্ষরা। লুম্পেনের মতো আচরণকারী একদল ছেলের স্কুল চত্বরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলন, বোরখা পরা একটি মেয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে জয় শ্রীরাম চিৎকারে কান ফাটানো, এটা সংবিধানের কোন ধারার অন্তর্গত? অথচ এই আচরণকে ‘হিন্দু সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দেওয়ার জন্য সাংবাদিক রানা আইয়ুবের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে!
দ্বিতীয় প্রশ্ন যেটা উঠছে, ‘সব ধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য’ হলেও সব ধর্মের ক্ষেত্রেই কি সেটা পালন করা হয়? কে দেবেন জবাব?