গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকাকুল বাংলার, বিশেষ করে স্বর্ণযুগের বাংলা গানপ্রেমী মানুষজন। সেই আবহেই বিতর্কের সূত্রপাত করলেন কবীর সুমন।
কিছুদিন আগেই ‘আরএসএস ঘনিষ্ঠ’ বলে এক সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিককে গালাগালি দিয়ে কবীর সুমন চরম বিতর্ক তৈরি করেছিলেন, উল্লেখ্য সেদিনও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের অপমান নিয়ে কথা তুলেছিলেন এই শিল্পী।
তিনি ভারত সসরকারের ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কারের জন্য শেষবেলায় মনোনীত করার বিপক্ষে আওয়াজ তুলে বলেছিলেন, “এটা বয়স্কা শিল্পীর প্রতি চরম অপমানের সামিল।” ঘটনাচক্রে সন্ধ্যাও এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যানও করেছিলেন। তবে কবীর সুমনের স্পষ্ট দাবি ছিল “ভারতরত্ন দেওয়া উচিত ছিল তাঁকে।” এই বিতর্ক এবং টেলিফোনে সাংবাদিককে গালাগালি দেওয়া নিয়ে কয়েকদিন আগে পর্যন্তও উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলা তথা ভারতের সাংস্কৃতিক মহল। এবার সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবসেই নিভু নিভু বিতর্কের সলতে আরো একবার উস্কে দিয়েছেন সুমন।
এবার অবশ্য কোনো দল বা সংগঠন নয়, তবে তাদের সংস্কৃতির হিন্দুত্ববাদী পৃষ্ঠপোষকতাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকের স্ট্যাটাসে কবীর সুমন লিখেছেন, “হিন্দি হিন্দুত্ব হিন্দিয়াবাদীরা সফল। বাংলার সুরসম্রাজ্ঞীকে অপমান করে তাড়ানো গ্যাছে।”
যদিও সরাসরি শিল্পীর মৃত্যুর সাথে এই পোস্টের বক্তব্যের কোনও যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে পরোক্ষভাবে তিনি ভারত সরকার তথা গেরুয়া শিবিরকেই ‘হিন্দু ও হিন্দীবাদী’ বলে আখ্যা দিতে চেয়েছেন সেটা পরিস্কার বুঝতে পারা যায়। তবে কিছু মানুষ ‘হিন্দিয়াবাদী’ শব্দটার মধ্যে সংকীর্ণতার আভাস লক্ষ্য করছেন। কেননা গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় শুধু বাংলা গান তো নয়, পাশাপাশি প্রচুর হিন্দি গানও গেয়েছেন। সুতরাং হিন্দি ভাষাকে অযথা আক্রমণের কোনও প্রয়োজন ছিলনা বলেই মনে করছেন সাংস্কৃতিক মহলের একাংশ।
তবে সংবাদ মাধ্যমকে ফোনে আর কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে স্পষ্টতই অস্বীকার করেছেন সুমন, এবং আজকের এই ফেসবুক পোস্ট যে সেদিনের বিজেপি, আরএসএস মদতপুষ্ট ব্যক্তিদের লক্ষ্য করেই ছুঁড়েছেন কবীর সুমন, তাতে কোনও সংশয় নেই।