‘নিকাল!…প্যাহেলি ফুরসত মে নিকাল!’ এই সংলাপে লাখ লাখ ভিউয়ারের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন হিন্দুস্তানি ভাউ। ইউটিবার হিসেবে বেশ বিখ্যাত। বিভিন্ন ইস্যুতে প্রায় সঞ্জয় দত্তের ঢঙে নিজের বক্তব্য রাখার জন্যই মূলত বিখ্যাত হিন্দুস্তানি ভাউ ওরফে বিকাশ ফাটক। সম্প্রতি ছাত্রদের আন্দোলনে ওস্কানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন তিনি। এফআইআর দায়েরের ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে ধারাভি পুলিশ।
জানুয়ারির ২৪ তারিখ নাগাদ ইনস্টাগ্রামে একটি লাইভ ভিডিও করেছিলেন বিকাশ ফাটক। চামকি ড্রেস, হাতে গলায় গোল্ডেন ব্রেসলেট ও সোনারূপো খচিত বালা চেনের খচখচানি নিয়ে গোল্ডেন ফ্রেমের চশমায় তিনি আবির্ভূত হন। ‘সঞ্জুবাবা’-র কায়দাতেই পড়ুয়াদের অনলাইন পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আসর গরম করে দেন। ভাউ বিকাশের বক্তব্য অনুযায়ী, “করোনায় লক্ষ লক্ষ লোক মৃত্যুর কবলে ঢলে পড়েছেন। উপরন্তু ওমিক্রনের নাটক শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন এমন হুট করে ‘অফলাইন’ অর্থাৎ পড়ুয়াদের সশরীরে আসার নির্দেশ দিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান! তাই ছাত্ররা জমায়েত হয়ে প্রতিবাদ করো!”
নবম ও দশম শ্রেণীর পরীক্ষা বাতিল করার দাবিতে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের পড়ুয়ারা ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করে। এই অবস্থায় বিকাশ ফাটক সমস্ত পড়ুয়াদের সমর্থন করে ছাত্র আন্দোলনের জন্য ওস্কাতে থাকেন। ৩০ জানুয়ারি তিনি আরো একটি লাইভ করেন ইনস্টাগ্রামে, যেখানে তিনি ‘৩১ ফেব্রুয়ারি’ বলে উচ্চারিত ভুল ‘৩১ জানুয়ারি’ উল্লেখ করে আরো একবার পড়ুয়াদের শিক্ষামন্ত্রকের অফিসের বাইরে জড়ো হয়ে তীব্র আন্দোলনের জন্য ওস্কাতে থাকেন। বিকাশ এখানে স্পষ্টতই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “নিজেরা অনলাইন মিটিং সারছেন। আর ছাত্রদের ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন নেতামন্ত্রীরা। সরকারই সকলকে বাড়িতে থাকতে নির্দেশ দিচ্ছে , আবার সেই সরকারই পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে বলছে! এর বিরুদ্ধে চরম আন্দোলন হওয়া উচিত।” তবে ধারাভি পুলিশ হিন্দুস্তানি ভাউ বিকাশ ফাটককে ফটকে পুরে দেওয়াই উচিত মনে করেছেন। কেননা এই ভিডিওতে ২ লক্ষেরও বেশি ভিউ লক্ষ করা যায় , এবং পড়ুয়াদের উত্তেজনাকে হাতিয়ার করে তাদের বিপথে চালিত করতে পারে।
মহারাষ্ট্রের শিক্ষামন্ত্রী রাকেশ তোপের কথা অনুযায়ী,”সবদিক বিবেচনা করেই অফলাইনে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক ও করোনাবিধি মেনেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।” উল্টোদিকে বিকাশের কথায় উত্তেজিত হয়ে ছাত্রছাত্রীরা জমায়েত শুরু করলে, সামাজিক দূরত্ব বিধি তো থাকবেই না, পরিস্থিতি আরো ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। ঘটনাচক্রে সেদিন তাই হয়। মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি জায়গায় জড়ো হয়ে পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এমনকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চার্জও করতে হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। তাই শিক্ষামন্ত্রী তোপের তোপ গিয়ে পড়েছে ফাটকের ওপর। বিকাশের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রকের কড়া নির্দেশ– জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য এইভাবে পড়ুয়াদের ওস্কানো তাঁরা একেবারেই অনুচিত বলে মনে করেছেন।
View this post on Instagram