দেশে সাম্প্রদায়িক বিষ এমনই পরিকল্পনামাফিক ছড়ানোর চেষ্টা করে চলেছে ধর্মের স্বঘোষিত মুরুব্বিরা, মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বিচারবিভাগ কিছুকেই তারা গ্রাহ্য করেননা। এই একুশ শতকেও বিভিন্ন প্রান্তে ছোট ছোট গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে এরা নিজেরাই বিচারক সেজে সমাজে ছড়ি ঘুরিয়ে চলেছে, কোথাও ছড়ির বদলে শান চকচকে হিংসার ছুরি! তেমনই এক সংগঠন আগ্রার ‘ধরম জাগরণ সমন্বয় সংঘ’। হিন্দু মেয়ের সাথে প্রেমের কারণে এক মুসলিম যুবকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল এই ‘জাগরণ সংঘের’ হিন্দু যুবকরা।
প্রশ্ন উঠছে, মুসলিম যুবকের সাথে প্রেম করা কি অপরাধ? সেটা তো তারাই ঠিক করবে। আদ্যোপান্ত অন্ধকারে বুঁদ হয়ে থাকা এইসব তথাকথিত হিন্দু মৌলবাদীরা, যারা ‘ধরম জাগরণ..’ করার ভান করে ধর্মের নাম দিয়ে আদতে সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াবার ঠেকা নিয়ে রেখেছে! ঘটনাটি সম্প্রতি আগ্রায় ঘটেছে।
সাজিদ নামের এক মুসলিম যুবকের সাথে পালায় (নাকি পালাতে বাধ্য হয়!) ২২ বছরের এক হিন্দু তরুণী। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নাক গলাতে উদ্যত হয়েছে ঘুমিয়ে থাকা ‘জাগরণ’বাদীরা। তারা যুবকটির উদ্দেশ্যে তরুণীকে অপহরণের অভিযোগ তুলেই ক্ষান্ত হয়নি, আগ্রার রুনাক্তা অঞ্চলে সাজিদের বাড়িতে গিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে! অপরদিকে সোশ্যাল মাধ্যমে এসে ওই তরুণী অপহরণের অভিযোগ নস্যাৎ করে খোলাখুলি জানিয়েছেন, “আমরা সাবালক। আমি ওর সাথে স্বেচ্ছায় চলে এসেছি।”
সাজিদের বাড়িতে হামলার এই ঘটনায় সাময়িকভাবে কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ ‘হিন্দু অপরাধীদের’ মদত দিলেও, শেষপর্যন্ত প্রশাসন নিষ্ক্রিয় থাকেনি। এটা ভালো দিক, এসপি সুধীর কুমার সিংকে পুলিশের সত্যিকারের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। সাজিদের বাড়িতে আগুন লাগানোর অপরাধে হিন্দুঘুমন্ত জাগরণী দলকে একেবারে জাগিয়ে ছেড়েছেন তিনি। পুলিশের তরফে এফআইআর করেছেন তাদের বিরুদ্ধে। এসপি সুধীর কুমার সিং এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “ছেলেটি এবং মেয়েটি সাবালক।” তিনি ছাড় দেননি স্থানীয় পুলিশ আধিকদেরও। তদন্তের প্রেক্ষিতে হিন্দুত্ববাদীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে,এমনটাই জানিয়েছেন এসপি। যুবক সাজিদ এখনও পালিয়ে রয়েছে। শীঘ্রই ফিরে আসার অপেক্ষায় তার নির্যাতিত পরিবার।