ইউটিউব যে পেশার ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হতে পারে, কয়েকবছর আগেও এতটা ভাবতে পারতেননা কেউ। এইমূহুর্তে বাংলার জনপ্রিয়তম ইউটিউবার কিরণ দত্ত( বং গাই) বলছেন, “বাংলায় আমি যখন প্রথম ইউটিউবে ভিডিও কন্টেন্ট করা শুরু করি, তখন এখানে কারুর ধারণার ছিলনা যে এটা মূল রোজগারের পথ হতে পারে। তা সত্ত্বেও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্যাম্পাসে না বসে আমি ঝুঁকিটা নিয়েছিলাম, শেষপর্যন্ত এটা ক্লিক করে গিয়েছিল।”
বং গাই আরো জানান, “এখন অনেকেই এই পথে আসছেন কারণ এখানে অন্য কারুর সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারটা নেই। আর পরিকল্পিতভাবে নামলে এই মাধ্যম থেকে ভালো টাকা রোজগার করা সম্ভব।”
ওপরের এই বক্তব্য থেকে কয়েকটি বিষয় আন্দাজ করা যাচ্ছে, প্রথমত যেটা দরকার ধৈর্য, দ্বিতীয়ত সঠিক পরিকল্পনা –এইসময়ে একজন ভিডিও কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে, কারণ ক্যারিমিনাতি, বং গাই বা ওয়ান্ডার মুন্নার মতো বিরাট জনপ্রিয় না হলেও, ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে সফল ইউটিউবার হিসেবে রুটিরুজির ব্যবস্থা করছেন এই সংখ্যাটা প্রচুর। অক্সফোর্ড ইকনমিকসের সাম্প্রতিক সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২০ সালে ভারত সরকারের কোষাগারে প্রায় ৬,৮০০ কোটি টাকা ইউটিউবারদের রোজগারের অংশ থেকে ঢুকেছে।
প্রাথমিকভাবে ইউটিউবকে পূর্ণ সময়ের রোজগারের মাধ্যম হিসেবে ভাবা যায় কিনা তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে কোয়ালিটি কন্টেন্ট হলে আর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা বাড়তে থাকলে একজন ইউটিউবার তাঁর রোজগার সুনিশ্চিত করতে পারবেন এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
অক্সফোর্ডের এই সমীক্ষাতেই তথ্য উঠে এসেছে –ভারতে ১ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার যুক্ত ইউটিউব চ্যানেলের সংখ্যা এখন প্রায় ৪০,০০০ ছাড়িয়েছে।এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছেন দুজন। কিরণ দত্তের (বং গাই) সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ৩৬ লক্ষর ওপরে। ইন্দ্রানী বিশ্বাসের(ওয়ান্ডার মুন্না) সাবস্ক্রাইবার সাড়ে ১১ লক্ষ প্রায়। এছাড়াও অসংখ্য ইউটিউবার নিজেদের মতো করে আর্থিক নিশ্চয়তা খুঁজে পেয়েছেন ইউটিউবের মাধ্যমে।
(ওয়ান্ডার মুন্না) ইন্দ্রাণী বিশ্বাসের মতে, “এই মাধ্যম থেকে অনেকেই এমন অঙ্কের টাকা রোজগার করেন যা নামী দামি সংস্থার ৯টা-৫টা চাকরিতে পাওয়া সম্ভব নয়। আমরা যখন ময়দানে নামি তখন অনেকেই আমাদের বাঁকা নজরে দেখত। তারা ভাবতেই পারতনা এই মাধ্যম থেকে সফল হওয়া সম্ভব। এখন নতুনরা আমাদের দেখে ইন্সপায়ার্ড হন। এই মাধ্যম আগামী দিনে অনেকের ভবিষ্যৎ গড়বে।”