ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবসের আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার ট্যুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, “আগামীকাল ৬ এপ্রিল আমাদের বিজেপি কর্মীদের জন্য বিশেষ দিন। যাঁরা এই দল তৈরি করেছেন ও নিরন্তর সেবা করে গিয়েছেন, তাঁদেরই স্মরণ করব আমরা।”
আজই সেই বিশেষ দিন। ২০২২-এর ৬ এপ্রিল পালিত হচ্ছে বিজেপির ৪২ তম প্রতিষ্ঠা দিবস। এইদিন থেকে শুরু করে টানা ৮ দিনের ঢালাও কর্মসূচির আয়োজন করেছে বিজেপি। ১৪ তারিখ আম্বেদকরের জন্মদিবস পালন করেই শেষ হবে এই দীর্ঘ কর্মসূচি। পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবসের সূচনায় সারা দেশে বিজেপির প্রচারের ডাক দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জনসঙ্ঘের জন্য বলিদানপ্রাপ্ত সংগঠকদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। এরপরেই সমস্ত বিজেপি কর্মী ও সংগঠকদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান, “ভারতের জন্য তৈরি হচ্ছে নতুন সম্ভাবনা। দেশবাসী গর্ব করে বলছে দেশ বদলাচ্ছে।”
এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে রাজ্যসভার ১০০ সাংসদ নিয়ে রেকর্ড গড়ার প্রসঙ্গও উঠে আসে। এই ব্যাপক ভোটের অধিকাংশই “মা বোনদের”, উল্লেখ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, স্বনির্ভরতা, আত্মবিশ্বাসে নারীশক্তির ক্ষমতাবৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতীয় রাজনীতিকে দুভাগে ভাগ করেছেন নরেন্দ্র মোদী –রাষ্ট্রবাদ ও পরিবারবাদ। দ্বিতীয়টিতে কংগ্রেসকে খোঁচা দেওয়া হয়েছে স্পষ্ট। দেশের উন্নতিতে বিজেপি সরকারের অগ্রগণ্য ভূমিকা বিশেষত ‘লোকাল’-কে ‘গ্লোবাল’ করার কথা বলতে গিয়ে দৃঢ় হয়ে ওঠে প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠস্বর। কিন্তু এই গোটা পরিসরে তাঁর নিজের অবস্থানকে তিনি কিভাবে দেখছেন?
বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদী এইসময়ে অবিচ্ছেদ্য নাম। কিন্তু আশ্চর্যজনক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য। তিনি বলেন, “কিছু লোক পরিবারের জন্য কাজ করে। বিজেপি দেশের জন্য কাজ করে। আমিও একজন সাধারণ বিজেপি কর্মী। সেভাবেই কাজ করব। সবাই মিলে রাষ্ট্রসেবায় নিয়োজিত থাকব।”
রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে পরিচিত ব্যক্তি মাত্রেই জানেন বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোয় বকলমে রাষ্ট্রপতি থাকলেও, কার্যনির্বাহী ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীই সর্বোচ্চ পদাধিকারী বিবেচিত হয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের অবস্থানটিকেও দুভাগে বিভক্ত করে নিয়েছেন –রাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মী! তাঁর বক্তব্যের সূত্র সেই ইঙ্গিতই করছে।