সম্প্রতি একটি লাইভ সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জী নিজের ব্যক্তিগত ও পরিবারের ভেতরকার অনেক কথাই অকপট ভঙ্গিতে শেয়ার করলেন। যেখানে বিবাহ প্রেম বিচ্ছেদ ও সন্তান প্রসঙ্গে এক অভিনব ভাবনা চিন্তার স্বাদ পেলেন নেটিজেনদের সম্প্রদায়। এই সংবাদেই তার কিছু কথা রাখা হচ্ছে, যা থেকে নেটনাগরিকরা অচেনা এক রচনাকে তো খুঁজে পাবেনই, সাথে পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে আশ্চর্য দৃষ্টিকোণ হয়তো অনেককেই অবাক করবে।
বাংলা ও দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের প্রখ্যাত নায়িকা রচনা ব্যানার্জীর ফ্যান ফলোয়ার নেহাত কম নয়! বর্তমানে সিনেমা থেকে কিছুটা দূরত্ব পালন করলেও টিভি শো ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এর সূত্রে এখনও সমানতালে জনসংযোগ রক্ষা করে চলেছেন সাম্প্রতিক অতীতের ব্যস্ততম সুন্দরী নায়িকা রচনা ব্যানার্জী। নিজের প্রেম বিয়ে নিয়ে কী অবস্থান রচনা ব্যানার্জীর? তিনি কি সিঙ্গেল নাকি ডিভোর্সি! অথবা রয়েছে কারোর প্রতীক্ষা! এখনও! এই প্রশ্নে স্বভাবতই উচ্ছসিত ভঙ্গিতে দামি হাসিটা উপহার দিয়ে মাথা ঝাঁকান। একই সঙ্গে জানান, “আমি ম্যারেইড, হ্যাপিলি ম্যারেইড নই, তবে ডিভোর্সিও নই।”
এই আশ্চর্য পরস্পর বিরোধী উত্তরে সঞ্চালকের মতো অনেক মানুষই ভড়কে যাবেন। তবে রচনা খোলাখুলিভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন। জানালেন একমাত্র সন্তানের কথা ভেবেই তিনি ও তাঁর স্বামী ডিভোর্স চাননি। যদিও ওরিশায় সিদ্ধান্ত মহাপাত্রের সঙ্গে তাঁর বিয়ে স্থায়ী হয়নি, সেক্ষেত্রে অবশ্যই সন্তান ছিলনা। এখানে দ্বিতীয় স্বামী প্রবাল বসুর কথাই বলা হচ্ছে। এই বিয়েতেও সুখী নন রচনা! এই তথ্যেই রচনার কথা সত্যি রূপে প্রতিফলিত হয়।শুধুমাত্র সন্তানের জন্যই আর ডিভোর্স চাননা তিনি। “চাইনি আমার সন্তানের দিকে কেউ আঙুল তুলুক। এটা আমাদের মিউচুয়াল সিদ্ধান্ত। আমরা একসাথে থাকিনা, কিন্তু আমরা খুব ভালো বন্ধু।” বললেন রচনা।
রচনা ব্যানার্জী জানান, সন্তানের জন্মদিন থেকে শুরু করে পরীক্ষা, প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি ও তাঁর স্বামী একসঙ্গে অংশ নেন, ছেলের বাবা ছেলেকে পড়ায়। সপ্তাহে মাঝেমাঝেই তাঁরা একসাথে খাওয়া দাওয়া গল্পগাছা সবই করেন, তারপর যে যার নিজের দুনিয়ায় স্বাধীনভাবে বিচরণ করেন।
বিবাহিত জীবনে যেমন অনমনীয় দৃঢ় মনোভাব, তেমনই স্বাবলম্বী হবার ক্ষেত্রেও রচনার মনোভাব আর পাঁচটা সাধারণ মহিলার চেয়ে এগিয়ে। তাই তিনি অনায়াসে বলতে পারেন, “আমি কোনও পুরুষের প্রতি নির্ভরশীল হতে চাইনা। এমনকি সন্তানের কাছেও এমন কোনও প্রত্যাশা রাখেননা তিনি। কিন্তু এতটা মানসিক জোর পেলেন কোথায়, টলিউড ও দক্ষিণী ছবির গ্ল্যামার জগতের অধরা নায়িকা রচনা?
রচনা ব্যানার্জী উত্তরে জানালেন, “দিদি নাম্বার ওয়ান-এ এসে। অসংখ্য দিদিদের মানসিক জোর দেখে তিনি এই জোর পেয়েছেন।” এক্ষেত্রে নিজের সহৃদয়তার কথা একরকম বিনয়ের সাথেই এড়িয়ে গেছেন রচনা। তবে এই টিভি শোয়ের মাধ্যমে তিনি যে আরো ব্যাপক জনসংযোগে এসেছেন কৃতিত্ব দিলেন তাকেই। শুধু একটিমাত্র ক্ষেত্রে দুর্বল রচনা ব্যানার্জী। অবশ্য বাইরে দুর্বলতা মনে হলেও আসলে একরকম প্রেরণার শক্তিই তাঁর বাবা প্রয়াত রবীন্দ্রনাথ ব্যানার্জী।
এই সাক্ষাৎকারেই উঠে আসে বাবার মৃত্যু একটা বিরাট ধাক্কা ছিল রচনার কাছে। যাঁর কথা বলতে গিয়ে ভাষা হারিয়ে ফেললেন অভিনেত্রী। একদলা কান্নাই ভাষা হয়ে বেরিয়ে এল। আর তাঁর জীবনে বাবার বিশাল ছায়ার মতো অস্তিত্বের কথা। এই রচনা ব্যানার্জীকে দেখলে, সকলেই এক অনন্য ব্যক্তিত্বের সন্ধান পাবেন, একথা নিশ্চিত করে বলা যায়।