ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রের নিরিখে ইদানিং শাসক-বিরোধী সব দলেই ‘বহিরাগত’ শব্দটির ব্যাপক প্রয়োগ লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই শব্দটিকে ধারালো শান দিয়ে এবার সরাসরি নিজের প্রাক্তন দল বিজেপিকেই ‘মুহতোড়’ জবাব দিলেন সদ্য তৃণমূলের প্রার্থী বিখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। বিজেপি তাঁকে ‘বহিরাগত’ বলায় সরাসরি আঙুল তুললেন প্রধানমন্ত্রীর দিকে। আর শত্রুঘ্নর এই প্রশ্নের উত্তর দিতেই বিজেপি নেতাদের কালঘাম ছুটছে। তাঁরা যাকে বলে একেবারে ‘খামোশ!’
২০১৯ সাল থেকেই বিজেপি দলের নানান ইস্যুতে মতভেদ জাহির করছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শত্রুঘ্ন সিনহা। অলিখিত ভাবে একরকম টা-টা বাই-বাই জানিয়েই রেখেছিলেন তিনি। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মপদ্ধতির প্রশংসা করতি শোনা যাচ্ছিল বলিউডের দোর্দণ্ডপ্রতাপ অভিনেতাকে।
তখন থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল শত্রুঘ্ন নির্ঘাত ফুল বদলাতে চলেছেন। এবার সেই জল্পনাকেই সত্য প্রমাণ করে পদ্মশিবিরকে বিদায় জানিয়ে ঘাসফুল শিবিরে পদার্পণ করেছেন তিনি। আসানসোলের লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন শত্রুঘ্ন সিনহা। আর তারপর থেকেই ক্রমাগত তাঁকে ‘বহিরাগত’ বলে আক্রমণ শানাচ্ছে বিজেপি। তিনিও দমবার পাত্রটি নন।
স্বভূমি গুজরাত ছেড়ে ২০১৪ ও ২০১৯ সালে বারাণসীর কেন্দ্র থেকে পদপ্রার্থী হয়ে লোকসভার ভোটে লড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই প্রসঙ্গ তুলেই শত্রুঘ্ন সিনহা প্রশ্ন রাখলেন, “আমি আসানসোলে বহিরাগত হলে বারাণসীতে নরেন্দ্র মোদীকে কী বলবেন? উনি তো বারাণসী থেকে ভোটে লড়েছেন, অথচ সেখানকার ভাষাটাই বলতে পারেননা।”
অভিনেতা তথা প্রাক্তন বিজেপি নেতা শত্রুঘ্ন সিনহা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একগাল প্রশংসা করে আরো বলেন, “এই মূহুর্তে সারা দেশের নজর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। আমি ধন্য যে মমতা দিদি আমার কথা ভেবেছেন।” পাশাপাশি শত্রুঘ্নর প্রতিজ্ঞা, “নিজের স্বার্থে কিছু করবনা। যা করব, আসানসোল ও পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জন্য করব। যা খ্যাতি পেয়েছি তাতে ভারতের অবদান। সারা ভারত আমায় চেনে।”
হিন্দিবলয়ের অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা যে বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেছেন সেটাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি।