QR কোডের ব্যবহার এখন সর্বত্র। খুচরো টাকাপয়সা লেনদেনের ঝামেলা এড়িয়েই পেমেন্ট করতে চায় ডিজিটাল ইন্ডিয়া। মুদি থেকে মিষ্টির দোকান, ভাড়াগাড়ি থেকে ভেলপুরী QR কোড ঝুলিয়ে রেখেছেন প্রায় সবাই। তবে ভিখারির কাছে QR কোড!’ না এতটাও ভাবা সম্ভব ছিলনা। অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনাটি কিন্তু সত্যি। বিহারের পাটনার এই ভিখারিকে অনেকেই মজা করে ‘ডিজিটাল ভিখারি’ আখ্যা দিয়েছেন।
ভিখারির নাম রাজু পাটেল। রাজু জানিয়েছেন ছেলেবেলা থেকে ভিক্ষাবৃত্তিই তাঁর পেশা। বেটিয়া রেলস্টেশনে বসেন তিনি। দাতার উদ্দেশ্যে ক্যাশ এবং QR কোড দুরকম ব্যবস্থাই রেখেছেন ভিখারি রাজু। গলায় ঝুলছে প্ল্যাকার্ডে সাঁটানো QR কোড। এছাড়া হাতে একটি ট্যাবও রয়েছে। এক সংবাদ সংস্থাকে রাজু বলেছেন, “আমি ডিজিটাল পেমেন্ট নিই। এতেই কাজ চলে যায় পেটও ভরে যায়। ছোটবেলা থেকেই ভিক্ষা করছি। এই ডিজিটাল যুগে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে একটু পাল্টে নিয়েছি।”
রাজু আর কোনও জীবিকা পাননি। বাধ্য হয়েই ভিক্ষাবৃত্তি নিতে হয়। স্টেশনেই রাত কাটান রাজু পাটেল। তিনি জানান, “অনেকসময় খুচরো নেই বলে অনেকে এড়িয়ে যান। ই-ওয়ালেটের জমানায় সঙ্গে ক্যাশটাকা রাখা হয়না বলেও পাশ কাটান অনেকেই।” তাদের জন্যই QR কোডের ব্যবস্থা করেছেন রাজু!
একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে ই-ওয়ালেটের তুরন্ত ব্যবস্থা করে নিয়েছেন রাজু। কোনও পাখি যাতে পালাতে না পারে! কিন্তু এই ভাবনা তার মাথায় গজালো কীকরে? অনুপ্রেরণা হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর নাম করেছেন ভিখারি রাজু পাটেল। আগে মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের ভক্ত ছিলেন রাজু। তাঁর আমলে অনেককিছু দান হিসেবে মিলত। রুজিরুটির চিন্তা ছিলনা। সেদিন আর নেই। তবে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ডিজিট্যাল ইন্ডিয়া ক্যাম্পেইন’-ই তাঁর প্রেরণার উৎস।
পাশাপাশি রাজু জানিয়েছেন, রেডিওতে নিয়ম করে প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শোনেন। একটা সেশনও বাদ দেননা। মোদীভক্ত রাজু ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র আলাদাই এক নজির তৈরি করলেন, যেকারণে তিনি খবরের শিরোনাম হয়ে উঠেছেন।