প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে ভার্চুয়াল বৈঠকে উত্তেজনা ধরে রাখতে পারলেননা মমতা। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের একাধিক বিরূপ আচরণ যে মুখ্যমন্ত্রীর সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে, এদিন তা প্রকাশ পেয়ে যায়।
তবে এই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি যে কর্তব্য ও সৌজন্যবোধ দেখিয়েছেন, তা দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই। স্বভাব নিন্দুকেরা বলছেন, এটা নাকি জন্মদিনে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাবার ফল! প্রসঙ্গত, ৫ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিনে ট্যুইটারে শুভেচ্ছা জানিয়ে নরেন্দ্র মোদী লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা দিদিকে জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা। তাঁর দীর্ঘায়ু এবং সুস্থ জীবন কামনা করি।” এই ট্যুইটের প্রত্যুত্তরে ‘মমতা দিদি’ লিখেছেন, “আপনার শুভেচ্ছার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।”
শুক্রবারের ভার্চুয়াল বৈঠকেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যথোপযুক্ত সম্মান দিয়ে, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নামে নালিশের বন্যা বইয়ে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ‘মমতা দিদি’। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক ডেকেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তবে এই সুযোগে রাজ্যপালের প্রতি অভিযোগের ঝাঁপি খুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এমনিতেই খুঁটিনাটি সমস্ত ইস্যু নিয়ে রাজ্যসরকারকে বিব্রত করে চলেছিলেন রাজ্যপাল। এবার রাজ্যসরকার একটি নোটিশ দিয়েছিল, যাতে সরকারি প্রকল্পের সুবিধার্থে প্রাইভেট সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকদের নিয়োগের ব্যাপারে বলা হয়েছিল। সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য চেয়ে বসেছিলেন রাজ্যপাল। এদিন প্রধানমন্ত্রীকে ভার্চুয়ালি সামনে পেয়ে ফেটে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী ‘মমতা দিদি’। তিনি স্পষ্ট নালিশ জানিয়ে বলেন, “বেসরকারি সংস্থা থেকে আধিকারিক নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল প্রশ্ন করেছেন, বিস্তারিত কাগজপত্র দেখতে চেয়েছেন। কিন্তু উনি জানেননা কেন্দ্রের পরামর্শ মেনেই নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসরকারের কর্তব্যবোধ ও সৌজন্য তুলে ধরে বলেন, “আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু কেন্দ্রের পরামর্শ আমরা ৯০ শতাংশই মেনে চলার চেষ্টা করি।”
এই সৌজন্যবোধে মুগ্ধ হচ্ছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাঁরা রাজ্যপালের প্রতিক্রিয়া জানার অপেক্ষায় রয়েছেন।