রাশিয়ার সাথে ভারতের ‘নতুন সম্পর্ক’-র কারণ আমেরিকার মুখ ফেরানো! কার্যত এমন দাবিই করলেন আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তাঁর মতে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের এই সম্পর্ক মোটেই প্রয়োজন ভিত্তিক নয়! অতীতের একাধিক ঐতিহাসিক মূহুর্তেই রাশিয়া ভারতের বন্ধুদেশ হিসেবে পাশে থেকেছে, এই বিষয়টিকে ব্লিঙ্কেন তেমন একটা আমল দেননি।
মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের কথায় , ‘‘ভারতের সঙ্গে কোনও দেশের সম্পর্ক তৈরি হলে, তা কয়েক দশক ধরে চলে। আমেরিকা, ভারতের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক তৈরি করার জায়গায় নেই। আর সে কারণেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করছে ভারত। কিন্তু আমেরিকা আবার ভারতের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক তৈরি করার প্রয়াসী হতে চায়।’’
ব্লিঙ্কেনের আরো সংযোজন , ‘‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারতের নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার চেষ্টায় অনেক সময় অতিবাহিত করেছেন।’’ সুতরাং আমেরিকা পুনরায় ভারতের সাথে দীর্ঘকালীন সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করবে সেটাও উল্লেখ করেছেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।কিন্তু এব্যাপারে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিটা ঠিক কী? সেটাই স্পষ্ট করে দিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
সারা বিশ্বকে সন্তুষ্ট করার দায় ভারতের নেই। তাই এখন থেকে ভারত নিজের স্বার্থকেই গুরুত্ব দেবে। ভারত অন্য কোনও দেশের অনুমোদনের জন্য মুখাপেক্ষী নয় –জয়শঙ্কর তাঁর বক্তব্যে এটাই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে ভারতকে সরাসরিই নিষেধ করেছে আমেরিকা।
কয়েকদিন আগে দিল্লি-মস্কো সামরিক সহযোগিতার প্রসঙ্গে ক্ষোভ জানিয়ে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘‘ভারতের এবং অন্য দেশগুলির প্রতি আমাদের বার্তা— আমরা প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে তাদের রাশিয়া-নির্ভরতা দেখতে চাই না। আমরা এই বিষয়ে স্পষ্ট ভাষায় তাদের নিরুৎসাহিত করতে চাইছি।’’
সেই সুর ধরেই অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক প্রসঙ্গে উপরোক্ত মন্তব্যগুলি করেন। যার উত্তরে ভারতের স্বাধীন অবস্থানকেই দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেছেন বিদেশমন্ত্রী এস.জয়শঙ্কর। ব্লিঙ্কেন অবশ্য এক টিপে দুইপাখি মারতে চেয়েছেন। একদিকে তাঁর বক্তব্যে যেমন রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে অসন্তোষ , তেমনই ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সুসম্পর্ক গড়তে চাওয়ার ইচ্ছা দুইই প্রকাশ পেয়েছে।