নিজের তৈরি করা জালে এবার নিজেই জড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী। জাতীয় সঙ্গীত ভুলসুরে, ভুলভাবে গাওয়া নিয়ে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এবার সেই অভিযোগেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করলেন কাঁথির ১নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির প্রেসিডেন্ট প্রদীপ গায়েন।
খুব সম্প্রতি কাঁথিতেই তৃণমূল কংগ্রেস আয়েজিত এক প্রতিবাদ সভার শেষে ভুল সুরে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কাউন্সিলর রিনা দাসের বিরুদ্ধে। থানায় তাঁর বিরদ্ধে অভিযোগ লিখিয়েছিলেন বিজেপি নেতা সৌমেন্দু অধিকারী।
এবার পাল্টা জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগেই শুভেন্দু অধিকারির বিরুদ্ধে মামলা করেছে তৃণমূল। এবারের বিতর্কটি জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার নির্ধারিত সময় নিয়ে। তৃণমূল নেতা প্রদীপ গায়েন অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, “৪ মার্চ কাঁথির বন্দেমাতরম ক্লাবের মাঠে ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় অতিক্রম করা হয়েছে, যা জাতীয় সঙ্গীতকে অবমাননা ও অপমানের সমান।”
শুভেন্দু অধিকারী সহ ৫ জন বিজেপি বিধায়কের নামে এই অভিযোগ দায়ের করে প্রদীপ গায়েনের দাবি, “দোষীদের অবিলম্বে শাস্তি চাই।”
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে কাঁথির বিজেপি বিধায়ক অরূপ রায় বলেছেন, “সঙ্গীত চর্চায় অপটু এক হাজার লোককে নিয়ে একসঙ্গে নির্ভুলভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হচ্ছিল। তার জন্য যেটুকু সময় লাগে তাই লেগেছে।” তাহলে পাল্টা কেউ বলতেই পারেন, কাউন্সিলর রিনা দাসকে সঙ্গীতে ‘অপটু’ ধরে নিতে অসুবিধা কোথায় ছিল?
তৃণমূলের অভিযোগের জবাবে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই, বিজেপি বিধায়ক কটাক্ষ করে বলেছেন, “যাঁরা নিজেরা ভুল জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন তাঁদের অভিযোগের ভিত্তি কী?” অর্থাৎ অভিযোগকারীদের প্রতি দলীয় ক্ষোভ থাকলেও নিজেদের ভুলটা সৌমেন্দু অধিকারী একরকম স্বীকার করেই নিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই যে বিজেপি ও তৃণমূলের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ, এর ভিত্তিতে মামলা করা আদৌ যায় কি? দুপক্ষই যা করেছেন!
আইনজীবীদের মতে, ‘জাতীয় সঙ্গীত ভুল গাইলে নিশ্চয়ই তা অবমাননাকর। ঠিক তেমনই জাতীয় সঙ্গীতের প্রথম প্যারা গাইতে ৫২ সেকেন্ডের বেশি সময় লাগলেও সেটি অবমাননার সামিল। কিন্তু এই দুই ক্ষেত্রেই এমন কোনও ধারার কথা বলা নেই, যার সাপেক্ষে মামলা করা যায়।’
তাহলে তাঁরা মামলা করছেন কীকরে? কেন করছেন? কীভাবেই বা করছেন? প্রশ্নগুলো তো স্বাভাবিকভাবেই উঠছে!