কোহলি বনাম বিসিসিআইয়ের বিতর্ক ক্রমশ চরম রূপ নিচ্ছে। কারণ বিষয়টা আর জাতীয় স্তরেই আটকে নেই। বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর প্রচুর প্রাক্তন ক্রিকেটারও এই বিষয়ে মতামত রাখছেন, তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মহল থেকেও ভেসে আসছে নানা মন্তব্য। তেমনই সৌরভ গাঙ্গুলীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দাগার ফলে তিনিও মুখ খুলছেন।
ইন্ডিয়া টিমে কোহলির আচরণ নিয়ে বোর্ডের কাছে অভিযোগ করেছিল তারই সতীর্থ ক্রিকেটাররা। সম্প্রতি সেই প্রশ্নই খুঁচিয়ে তোলা হল। খবর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘আইসিসি ওয়র্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল’ চলাকালীন বিরাট কোহলি অশ্বিন, চেতেশ্বর পূজারা এবং ভাইস ক্যাপ্টেন রাহানের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি ড্রেসিংরুমে ঢুকে গালাগালি পর্যন্ত দিয়েছিলেন।
এই অভিযোগ বোর্ডের কাছে আগেই জমা পড়েছিল। তখনই বিরাট কোহলিকে অধিনায়ক পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত একরকম নিয়েই রেখেছিল বোর্ড। ঘটনাচক্রে টিটোয়েন্টির অধিনায়ক পদ থেকে কোহলি নিজেই সরে যেতে চাওয়ায় ঘটনাটা একটু অন্যদিকে মোড় নেয়।
বোর্ডের এই পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্তের কথা জানতেন বলেই কি বিরাট কোহলিকে অধিনায়ক পদ ছাড়ার আগে ভাবনা চিন্তা করতে বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী? যেমনটা তিনি বলেছিলেন! এখন এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।
বিরাট কোহলি যদি সৌরভের কথা অগ্রাহ্য করে টিটোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে সরে গিয়ে থাকেন, তবে দলের বাইরে স্বেচ্ছায় এক পা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। যার ফলে পরের সিদ্ধান্ত, অর্থাৎ ওয়ান ডে-র অধিনায়কত্ব থেকে বিরাটকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিতে বোর্ডের সুবিধা হয়। আর অবশেষে তীব্র টানাপোড়েনে অতিষ্ঠ হয়ে টেস্টের অধিনায়ক পদও শেষপর্যন্ত নিজেই ছাড়লেন বিরাট কোহলি!
প্রথমদিকে বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভের দিকে আঙুল উঠলেও মুখ খোলেননি তিনি। বলেছিলেন ‘বোর্ড যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।’ এবার অভিযোগের একের পর এক তীর কোহলির দিকে ধাবিত হওয়ায় এটা পরিস্কার যে, বোর্ড প্রেসিডেন্ট একা নয়, বিরাটকে সরানোর প্রশ্নে টিম ইন্ডিয়ার অনেক সদস্যেরও প্রচ্ছন্ন সমর্থন ছিল।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মহলের অনেকেই বিরাট প্রশ্নে মুখ খুলছেন। এপ্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রাক্তন বোলার দিনেশ কানেরিয়া বলেছেন, “এটা সকলেরই জানা, বিরাট কোহলি আক্রমণাত্মক প্রকৃতির খেলোয়াড় এবং মাঠে প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধেও অনেকবার তা দৃশ্যমান হয়েছে। কিন্তু বিসিসিআই তার খেলোয়াড়দের প্রতি এই দুর্ব্যবহার সহ্য করবেনা।”
প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী, যিনি নিজের দলে অধিনায়ক হিসেবে সকলেরই প্রশংসিত ছিলেন, তিনি যে এই আচরণ কোনওভাবেই মেনে নেবেননা, এবিষয়ে সন্দেহ নেই। প্রসঙ্গত, আরো এক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির তুলনাও এনেছেন কানেরিয়া ও অনেকেই। ধোনি যে দলের মধ্যে উন্নত সংস্কৃতির ছাপ রেখেছিলেন, বিরাট কোহলি তা নষ্ট করেছেন বলেই স্পষ্ট অভিযোগ উঠছে। তাহলে ‘আক্রমণাত্মক’ এই ইমেজই কি শেষপর্যন্ত স্থানচ্যুত করল ক্যাপ্টেন কোহলিকে!