সাম্প্রতিক বিতর্ক ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ নিয়ে। বিতর্কটি খুঁচিয়ে তোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মতে কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পটি বাংলার নাম করে নিজের কৃতিত্ব হিসেবে চালাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীও এর পাল্টা জবাব দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা এক চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-র মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম পাল্টে ‘বাংলার বাড়ি’ নাম দিয়ে রাজ্যের নামে ফায়দা লুটতে চাইছে তৃণমূল সরকার।” শুভেন্দুর এই বক্তব্য নিয়ে স্বভাবতই বিতর্ক চরমে ওঠে।
এবার সরাসরি এই বিতর্কে প্রত্যুত্তর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন শুভেন্দুর এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বলেন, “অল ইন্ডিয়ার নামটা আমরা রিজিওনাল নামে করি। একেকটা রাজ্যের ভাষা অনুযায়ী সেগুলো একেকরকম হয়। বাংলা ভাষাটা যাতে বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছয়, সেজন্যই করা। এটা মানুষের কাছে ভাষাকে পৌঁছে দেওয়ার একটা ইউনিক পদ্ধতি।”
একটা প্রকল্পের মাধ্যমেও সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতিফলন থাকে সেই দৃষ্টান্তই তুলে ধরতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন,” যেটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গেয়েছিলেন, ‘বাংলার মাটি বাংলার জল,’ ওই থিমের ওপর ভিত্তি করেই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প।”
তাছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প মানেই যে সেটা কেন্দ্রের একার কৃতিত্ব সেটারও বিপক্ষে তথ্য দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “কেউ কেউ আবার গর্ব করে বলে ‘কেন্দ্রের টাকা!’ টাকাটা কেন্দ্র পাচ্ছে কোথা থেকে? এখান থেকে ৭৫ শতাংশ টাকা তুলে নিয়ে গিয়ে, রাজ্যকে নিচ্ছে ২৫ শতাংশ।
আমরা বলেছিলাম তোমরা ৫০ শতাংশ নাও, তাহলে আমরা নিজেদেরটা নিজেরাই করে নিতে পারব। তা হয়নি। তুমি নেবে ৭৫ শতাংশ ট্যাক্স, আর সবকিছু বাংলার ঘাড়ে চাপিয়ে কৃতিত্ব নেবে তা তো হয়না। এখানে প্রচুর প্রোজেক্ট আছে, যেখানে ম্যাক্সিমাম টাকা আমাদের দিতে হয়।”
কার্যত এভাবেই শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ নস্যাৎ করে একটি প্রকল্পে কেন্দ্র-রাজ্যের যৌথ ভূমিকার কথাটি স্মরণ করিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।