রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধের ১৬ দিন অতিক্রান্ত। এই যুদ্ধের বিপরীতে প্রথম থেকেই নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে ভারত। শান্তিকামী বার্তা দেওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ বিধানসভায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটও দেয়নি ভারত। এই কারণে আমেরিকা কিছুটা হলেও পরোক্ষভাবে উষ্মা প্রকাশ করেছে ভারত সম্পর্কে। তবে এতদিন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের অবস্থান স্পষ্টভাবে বক্তব্য আকারে রাখা হয়নি। এবার সেই কাজটাই করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বৃহস্পতিবার পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ৪টি রাজ্যে বিপুলভাবে জেতার পর দিল্লীর এক সভায় ভাষণ দিতে গিয়েই রাশিয়া-প্রসঙ্গ উঠে আসে নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যে। তিনি বলেন, “যুদ্ধরত দেশগুলোর সাথে ভারতের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। আর্থিক কারণে, নিরাপত্তাজনিত কারণে, লেখাপড়া এবং কূটনৈতিক কারণেও যোগাযোগ রয়েছে। ভারতের একাধিক প্রয়োজন জড়িয়ে রয়েছে দেশগুলোর সাথে।”
যুদ্ধের বিপক্ষেই ভারত, শান্তির বার্তাই দিয়ে আসছে বরাবর। সেই প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই যুদ্ধের ফলে বিশ্বের সব দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারত শান্তির পক্ষে। ভারত আশা রাখে আলোচনার মাধ্যমেই সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব।” ভারতের পাশাপাশি চিন ও আরব আমিরশাহীও যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি সেটাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন।
প্রসঙ্গত, মিশন গঙ্গার মাধ্যমে ইউক্রেনে থাকা প্রায় সমস্ত ভারতীয় নাগরিক ও ছাত্রছাত্রীকেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। এরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন।
যুদ্ধের বিরোধী হয়েও দেশের বিভিন্ন স্বার্থ জড়িয়ে থাকায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে মতদান যে ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়, তা একরকম খোলাখুলি জানিয়েই দিলেন তিনি। উল্লেখ্য, ইউক্রেন থেকে ছাত্র উদ্ধার চলাকালীন দেশীয় রাজনীতির হাওয়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছিল বিরোধীরা, সেই বক্তব্যও এদিন ছুঁয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “অপারেশন গঙ্গাকে প্রাদেশিকতার সংকীর্ণতা দিয়ে মাপা হচ্ছিল। ইউক্রেনে যখন ভারতীয় পড়ুয়ারা আটকে, তখন দেশের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছিল সমানে।”
অবশেষে মিশন গঙ্গার কৃতিত্বের ফলেই যে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা যে ইউক্রেন থেকে নিরাপদে ফিরে আসতে পেরেছে এদিনের বক্তব্যে সেই দৃষ্টিভঙ্গিই প্রতিফলিত হয় প্রধানমন্ত্রীর কথায়।