রাজ্য বিধানসভার বাজেটে তৃণমূল বিজেপি তরজা ছিল অবশ্যম্ভাবী। আর ঠিক সেটাই হলো। বাজেট অধিবেশনের দিন তুমুল হই হট্টগোলের মধ্যেই বাজেট পাঠ করলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তার আগেই অবশ্য ওয়াকআউট করে বিজেপি। শ্লোগানে প্রতিবাদে মুখরিত হয়ে ওঠে বিধানসভা চত্বর। তার মধ্যেই এটা আবার কিসের চমক? বিজেপি কর্মীদের গায়ে দেখা গেল মোদীজির ছবি ছাপানো ‘নমো’ লেখা টিশার্ট! এই বিশেষ পরিচ্ছদের হেতু কী?
চোখ টেনেছে বিজেপি কর্মীদের ‘নমো’ টিশার্ট। কৌতূহলী চোখের ছড়াছড়ি। এই বিশেষ টিশার্টের কারণ প্রসঙ্গে পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ জানান, “নরেন্দ্র মোদীই আমাদের নেতা। বিধানসভা হোক বা লোকসভা, লোকে নরেন্দ্র মোদীকে দেখেই আমাদের ভোট দেয় মানুষ। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফলও সেটাই প্রমাণ করেছে। সেই জয় উদযাপনের জন্যেই এমন সাজ।”
‘নমোস্তসসই, নমোস্তসই, নমোস্তসসই নমো নমোঃ!’ সংস্কৃত এই শ্লোক যেন টিশার্টের ওপরই প্রতিফলিত বলে হাল্কা বিদ্রূপ ছুঁড়েছে নিন্দুকেরা। তবে পরিচ্ছদটি যে আকর্ষণীয় ও উদযাপনের যোগ্য সে বিষয়ে কারোর সন্দেহ নেই। তবে মোদীবন্দনা থাকলেও, এই ঘটনায় আরো একবার এটাও প্রমাণিত যে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নির্ভরযোগ্য মুখ একমাত্র নরেন্দ্র মোদীই। সংগঠনের দিকে যে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি শিবিরের তেমন আস্থা নেই এটাই পরিলক্ষিত হতে দেখছেন অনেকে। পরোক্ষে এই কথাটা একরকম স্বীকার করেই নিলেন বিজেপির রাজ্যসভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
চার রাজ্যের বিজয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “এই জয় পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি কর্মী সমর্থকদের নিশ্চয়ই উজ্জীবিত করবে। রাজনৈতিক সন্ত্রাসের কারণে কর্মীদের মনোবল ভেঙে গিয়েছিল। কিন্তু এবার মনোবল ফিরে পাবেন তাঁরা। চার রাজ্যের গেরুয়া ঝড় থেকে বাদ যাবেনা পশ্চিমবঙ্গও। আমরা ২০২৪ সালে যেমন বাংলায় ভালো ফল করব তেমনই ২০২৬ সালে তৃণমূলকে রাজ্য থেকে ক্ষমতাচ্যুত করব।”
যদিও সুকান্ত মজুমদারের এই ভবিষ্যদ্বাণীকে আকাশ কুসুম বলেই বিবেচনা করছে তৃণমূল কংগ্রেস।তাছাড়া এদিন বিধানসভায় ‘নমো’ টিশার্টেও সেই ‘মনোবল’ ফেরানোর বার্তা দিয়ে একরকম ঘুরিয়ে সেটা স্বীকারই করেই নিলেন সুকান্ত মজুমদার। উপরন্তু পুরশুড়ার বিধায়কের কথার ফাঁক গলে যে সত্যিটা বেরিয়ে এসেছে, ‘নরেন্দ্র মোদীকে দেখেই সকলে ভোট দেন!’ সেই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জয়ের অনুকূল পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।