সম্প্রতি মুঘলদের ‘রিফিউজি’ আখ্যায়িত করে নেটনাগরিকদের ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়েছেন অভিনেতা ও নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরুদ্দিন শাহ্। এই সাক্ষাৎকারেই তিনি ধর্ম সংসদের হিংসাত্মক বক্তৃতার বিরুদ্ধেও প্রশ্ন তুলেছেন। ঔরঙ্গজেবের সমালোচনার পাশাপাশি ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আশঙ্কা করেছেন গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনার।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই হরিদ্বারে আয়োজিত ধর্ম সংসদে স্বামী প্রবোধানন্দ সহ একাধিক হিন্দু গেরুয়াধারী বক্তারা রুদ্ধদ্বার সভায় মুসলিম ও সংখ্যালঘু অন্য ধর্মাবলম্বীদের নিঃশেষ করতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার ডাক দেন। এই সভায় হিন্দু-মুসলিম সংঘাতে উস্কানিমূলক মন্তব্য করা হয়েছে বলেই একাংশের অভিযোগ। সেই সম্পর্কেই একটি সাক্ষাৎকারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ্ বলেছেন, “আমাদের কুড়ি কোটি মুসলমানের এটা মাতৃভূমি। আমরা এখানকারই, অথচ আমাদের বহিরাগত প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে। আমি ধর্মের কথা বলিনা, এখনও বলছিনা। তবে এধরনের প্রচার শুরু হলে জনগণ প্রবল ক্ষোভে ফেটে পড়বে!”
ভাষার সাথে ধর্মের সম্পর্ক নেই এটা উল্লেখ করে, ভারতে উর্দু ভাষার ঐতিহ্য সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেন পর্দার ‘মির্জা গালিব’। তিনি বলেন,”উর্দুকে পাকিস্তানি ভাষা হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে কেন? যে ব্যক্তি আমাকে পাকিস্তানে যেতে বলে, আমি তাকে প্রশ্ন করছি আপনি কৈলাসে যাননা কেন?”
হিন্দু-মুসলিমের পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষসূচক বিষ ছড়ানো হচ্ছে বলেই জোরালো দাবি তোলেন অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ্। কথাপ্রসঙ্গে মুঘলদের ভারতে অবদানের কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন,”শাসক বিচ্ছিন্নতাবাদের প্রচার করছে এবং ঔরঙ্গজেবকে অপমান করা হচ্ছে।”
ঔরঙ্গজেবকে সমর্থন করছেন কি নাসিরুদ্দিন শাহ্! প্রশ্নটা নাসিরুদ্দিনের সমর্থকদের মনেও ঘুরপাক খাচ্ছে। উল্লেখ্য, বারাণসীতে কাশী বিশ্বনাথ করিডোর উদ্বোধন সহ কয়েকটি সাম্প্রতিক বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারংবার ঔরঙ্গজেব প্রসঙ্গ টেনে আনছিলেন, যেন ঔরঙ্গজেব ছাড়া আর মুঘল সম্রাট ছিলেননা! একমাত্র উদাহরণ কি তিনিই? সম্ভবত ঔরঙ্গজেবের কথা উল্লেখ করে নাসিরুদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার প্রতিই লক্ষ্য করাতে চেয়েছেন।
অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ্-র এই প্রতিবাদমুখর সাক্ষাৎকার নেটদুনিয়ায় রীতিমতো ঝড় তুলেছে।