‘নেতাজি সুভাষচন্দ্রের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে বিজেপির রাজনীতি খাপ খায়না’। একথার উল্লেখ তিনি আগেও করেছেন। এবার প্রজাতন্ত্র দিবসের অবহেলিত ‘সুভাষ ট্যাবলো’ প্রসঙ্গে আরো একবার সোচ্চার হলেন তিনি। তিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কন্যা অনিতা বসু পাফ।
বঙ্গরাজনীতি বনাম জাতীয় রাজনীতির এই মূহুর্তের বিতর্কে সুভাষ-কন্যার প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষাই যেন বাকি ছিল। এবার জার্মানি থেকে নিজের মতামত ব্যক্ত করলেন তিনি। বৃহত্তর সংবাদমাধ্যমে অনিতা স্পষ্টতই জানিয়েছেন, “শুনেছি, তবে কেন কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার ট্যাবলো বাতিল করল, ঠিক জানিনা। তবে এবছর তাঁর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী, আর এবারেই প্রজাতন্ত্র দিবসে বাংলার ট্যাবলো বাদ দেওয়া হল, জেনে হতবাক আমি।”
পাশাপাশি অনিতা আরো বলেন, “গতবছর বাংলায় নির্বাচন ছিল। সেবারে খুব জাঁকজমক সহকারে জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছিল। একবছরে তেমন কোনও ইস্যু নেই তাই হয়তো বিষয়টা আর ততটা প্রাসঙ্গিক নয়!”
উল্লেখ্য, অনিতা বসু পাফ যে জন্মবার্ষিকীর কথা বলছেন, গতবছরের সেই জন্মবার্ষিকীতে নরেন্দ্র মোদীর সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একসাথে অনুষ্ঠান মঞ্চে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। এই বছরে, যেখানে বাংলার ট্যাবলো উল্লেখযোগ্য স্থান পাওয়ার কথা, সেখানে এমন সিদ্ধান্ত নেতাজির কন্যাকে অনেকের মতোই বিস্মিত করেছে। ক্ষোভের সাথে তিনি বলেছেন, “রাজনৈতিক কারণে কখনো কখনো কিংবদন্তি স্বাধীনতা সংগ্রামীর ঐতিহ্যকে আংশিকভাবে ব্যবহার করা হয়।”
এই কথার মধ্যে দিয়ে সরাসরি বিজেপির রাজনৈতিক স্বার্থে ‘নেতাজি’-কে ব্যবহারের ইঙ্গিতই করতে চাইলেন কি তিনি? নেতাজির কন্যা অনিতা বসু পাফ আরো একটি চমকপ্রদ তথ্য জানান। সেটা বাংলার মানুষকেই আরো বেশি হতবাক করে দেবে। ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’-এর পাশাপাশি সুভাষচন্দ্র বসুুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
কিন্তু এই কমিটির উল্লেখে অনিতা বসু পাফ আকাশ থেকে পড়লেন! তিনি জানান, “আমায় যে কমিটির সদস্য করা হয়েছিল, আমি কখনও শুনিনি সেখানে এমন কোনও বৈঠক করা বা লিখিতরূপে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমার কাছে এটি একটি অস্তিত্বহীন কমিটি।”
সুভাষ-কন্যা অনিতা বসুর এই মন্তব্য বিজেপি সরকারকে তীব্র অস্বস্তির মুখে ফেলেছে। পাশাপাশি বাংলার রাজনৈতিক মহলেও সাড়া পড়েছে। ‘ট্যাবলো’ প্রসঙ্গ তুলতে গিয়ে ‘কমিটি’ সম্পর্কেও এবার অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুললেন অনিতা বসু পাফ!
সত্যিই কি তাই?