VoiceBharat News images 2022 04 11T170054.685

দেশে ধর্ষণ এত বাড়ছে কেন? তার জবাব দিতে গিয়ে মূলত পর্নোগ্রাফী দেখাকেই দায়ী করলেন গুজরাতের বিজেপি নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি। তাঁর এই মন্তব্য কতটা যুক্তিযুক্ত তাই নিয়ে সাড়া পড়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ভারতের অধিকাংশ মানুষের হাতে এখনও পর্নোগ্রাফী সহজলভ্য। এই উদাহরণ খাড়া করেই সম্প্রতি এক ভাষণে হর্ষ সাংঘভি বলেছেন, “এধরনের কন্টেন্টের ভিউয়ারশিপ বেড়ে যাওয়া দেশের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।”

VoiceBharat News images 2022 04 11T170040.799


গুজরাতের ভূমিতে দাঁড়িয়ে যে বক্তব্য হর্ষ রাখলেন, সেটা কি গুজরাতের একাধিক ঘটনাকে পর্নভিডিওর ঘাড়ে দোষ চাপানোর উদ্দেশ্যেই?
ধর্ষণ কী ও কেন এই ধরনের মানসিকতা দেখা যায়, এর হাজারো মনস্তাত্ত্বিক কারণ রয়েছে। তবে এর জন্য পর্নোগ্রাফীকে দায়ী করেছেন এমন মনশ্চিকিৎসক হাতে গোণা। আর হর্ষ সাংঘভির মন্তব্যকে গুরুত্ব দিলে সারা দেশে কোটি কোটি ধর্ষক প্রতি ঘন্টায় জন্ম নিতেন ও যেখানে যখন পারতেন ধর্ষণ করতে শুরু করে দিতেন। কারণ এই ধরনের কন্টেন্টের ভিউয়ারশিপও কোটি কোটি।

অবশ্যই পর্নোগ্রাফীতে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের ব্যবহার শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের ধর্ষণের প্রবৃত্তির মূলে বেশি বেশি পর্ন দেখা! এটা একটু হাস্যকরই মনে হয়।
পরিবার বা পড়শিদের মধ্যে ধর্ষণের মতো অপরাধপ্রবণতা রয়েছে, এর জন্যও তিনি মোবাইল ফোনে পর্ন ভিডিওর সহজলভ্যতাকে দায়ী করেছেন।

VoiceBharat News images 2022 04 11T165634.689

বিজেপি নেতা সাংঘভির মতে, “একজন বাবা যখন তার মেয়েকে ধর্ষণ করে তা কি বড় সামাজিক সমস্যা নয়? এর কারণ হলো মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোনে পর্নগ্রাফির ফ্রি অ্যাকসেস ভারতে ধর্ষণের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।” এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে নিজের রাজ্য গুজরাতকে নিরাপদ বলে দাবি করেছেন তিনি।

নিঃসন্দেহে একজন বাবা কিংবা পারিবারিক সদস্য একটি মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছে এটা বড় সামাজিক সমস্যা। তবে প্রযুক্তির এত সহজলভ্যতার আগে থেকেই এধরনের প্রবণতা ছিল, বরং বেশি করেই ছিল। প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণেই খবরগুলি এখন জনসমক্ষে এসে পড়ছে, তার আগে কেউ জানতে পারতেননা।
ধর্ষণ বা যৌননির্যাতন এক ধরনের যৌন বিকার।

VoiceBharat News images 2022 04 11T165752.010

কোনো ব্যক্তির অবদমিত যৌনকামনা থেকে ধর্ষণ ঘটেনা, পর্নোগ্রাফী দেখার ফলে সেটা বরং কিছুটা হ্রাস পায়। মনশ্চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ এমনটাই মনে করেন। হ্যাঁ, যদিও একাধিক ভিত্তিহীন ভণিতা করে এরপরে যে মূল কথাটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংঘভি বলেছেন সেটা কাজের কথা।

তিনি জানান,কেরালা পুলিশ ‘ডি ড্যাড’ নামের একটি প্রকল্প শুরু করতে চলেছে। ছোট শিশুদের পর্নভিডিও এবং অনলাইন গেমিংয়ের আসক্তি ছাড়ানোর জন্য কাজ করা হবে এই প্রকল্পে। এর জন্য ১.৩০ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে। তিরুবনন্তপুরম, কোচি, ত্রিশূরে নির্মিত এই কেন্দ্রগুলি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। এটা ভালো উদ্যোগ তাতে সন্দেহ নেই।

By Partha Roy Chowdhury (কিঞ্জল রায়চৌধুরী)

Partha Roy Chowdhury (Bengali: কিঞ্জল রায়চৌধুরী) is staff journalist VoiceBharat News. email: kinjol@voicebharat.com