ভারতীয় রাজনীতির মঞ্চে ইদানিং নানা বিভ্রম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কে কেন কোন উদ্দেশ্যে কী করছেন তার কোনও ঠিক নেই। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদীর গান্ধীস্মরণ প্রসঙ্গে আরো একবার তেমনই বিভ্রম সৃষ্টি হল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গান্ধীজির মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা অর্পণ করে বলেছেন, “বাপুকে তাঁর পূণ্য তিথিতে স্মরণ করছি। তাঁর মহৎ আদর্শ প্রচারে আমাদের সকলকে মিলিতভাবে চেষ্টা করতে হবে।”
যখন প্রত্যেকেই দ্বন্দ্বে রয়েছেন, মৃত্যুদিবসকে ‘পূণ্য তিথি’ বলে উল্লেখ করে নরেন্দ্র মোদী কথার কিরকম প্যাঁচ কষলেন, ঠিক তখনই দেখা গেল রাজঘাটে গিয়ে গান্ধী স্মরণকারীদের তিনি বলছেন, “শহিদদের সেবা ও বীরত্ব চিরকাল স্মরণে রাখা হবে।” অপরদিকে, গান্ধীজিকে ‘শহিদ’ করে নিজেও ফাঁসির মঞ্চে ঝুলে ‘শহিদ’ হয়েছিলেন যিনি, সেই নাথুরাম গডসেকে স্মরণ করে শ্রদ্ধার্পণ করল হিন্দু মহাসভা।
বিজেপি শাসিত গোয়ালিয়রে একই সময়ে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু মহাসভা গান্ধীর হত্যায় অভিযুক্ত নাথুরাম গডসে ও নারায়ণ আপ্তের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রদান করে সম্মাননা জ্ঞাপন করেছে!
পাশাপাশি এবছর এই হিন্দু মহাসভা আয়োজিত ‘শহিদ নাথুরাম’ স্মরণে কালীচরণ মহারাজকে ‘গডসে-আপ্তে-আপ্তে ভারতরত্ন’ সম্মান প্রদান করে। উল্লেখ্য, এই কালীচরণ মহারাজ সেই ব্যক্তি, যিনি কিছুদিন আগেই ধর্ম সংসদে মুসলিম নিধনে উস্কানিমূলক মন্তব্যে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।
গান্ধী স্মরণ নিয়ে দুই বিপরীত মঞ্চাভিনয় এই মঞ্চের দুইপাশে অনুষ্ঠিত হবার পরেই এপ্রসঙ্গে সোচ্চার হয়েছেন রাহুল গান্ধী। তিনি আরো একবার হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদের পার্থক্য টেনেছেন। রাজঘাটে গান্ধীজিকে শ্রদ্ধার্পণ করে তিনি বলেন, “একজন হিন্দুত্ববাদী গান্ধীজিকে গুলি করেছিলেন। সব হিন্দুত্ববাদীই মনে করেন গান্ধীজি আর নেই। আসলে সত্যের মধ্য দিয়েই বাপু জীবিত রয়েছেন।” পাশাপাশি তাঁর কটাক্ষ , “আরএসএস-বিজেপি নেতারা নিজেদের হিন্দু বলে প্রচার করেন। আসলে তাঁরা হিন্দুত্ববাদী।”
এই টানাপোড়েন চলাকালীনই একই মঞ্চে বিজেপির নির্বাচিত প্রতিনিধি নরেন্দ্র মোদী ও হিন্দু মহাসভা গান্ধী ও গডসে স্মরণে অনুষ্ঠান পালন করেছেন। এর দ্বারা কী প্রতিপন্ন করতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী? কী বলছেন মানুষজন? জানতে চোখ রাখুন ভয়েস ভারত নিউজের সংবাদের পাতায়।