VoiceBharat News IMG 20220511 131114

সাহিত্য সাধনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অ্যাকাডেমি পুরস্কার পাওয়ার পরেই একের পর এক পুরস্কার ফেরতের পালা শুরু করলেন বুদ্ধিজীবি লেখক লেখিকারা। ইতিমধ্যেই পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ২ বছর পুরস্কার প্রাপ্ত লেখিকা রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়। ইস্তফা দিয়েছেন সাহিত্য অ্যাকাডেমির উপদেষ্টা সদস্য অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস।

VoiceBharat News 1652187847 mamata


উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি সাহিত্য অ্যাকাডামি দ্বারা মনোনীত বিশেষ একটি পুরস্কার পেয়েছেন। যার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাংলা অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান ব্রাত্য বসু বলেছেন, “সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে নিরলস কাজ করার পরও যাঁরা সারস্বত সাধনা, সাহিত্য সাধনা করে চলেছেন তাঁদের এই পুরস্কার অর্পণ করা হবে। সমস্ত শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক জানিয়েছেন প্রথম বছর এই পুরস্কার মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হোক।”

সুতরাং এই পুরস্কারের ক্ষেত্রে ‘সাহিত্যের কৃতিত্বের’ পরিবর্তে ‘নিরলস চর্চা’-কেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশিষ্ট মহলের একাংশ। যদিও লেখক লেখিকারা এই বক্তব্যটিকে তেমন গুরুত্ব দিতে রাজি নন, বরং এটা একধরনের ‘অপলাপ’ বলেই মনে করছেন তাঁরা। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ‘অন্নদাশঙ্কর স্মারক সম্মান’ ফিরিয়ে দিয়েছেন অ্যাকাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখিকা এবং প্রখ্যাত গবেষক রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়।

VoiceBharat News 375174 8
রত্না রশিদের মতে, তাঁর এই প্রতিবাদ অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে বলেন, “উনি এক জন মান্যগণ্য মানুষ। উনি আমাদের সবার ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ওঁর কাছ থেকে পরিপক্ক সিদ্ধান্ত আশা করি। বইয়ের তো একটা স্ট্যান্ডার্ড (মান) থাকতে হবে। পুরস্কার দিলেই উনি নিয়ে নেবেন কেন!”

অপরদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অ্যাকাডেমি পুরস্কারে সম্মানিত করার ব্যাপারটি চরম নিন্দনীয় বিবেচনা করেই নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সাহিত্য অকাদেমির বাংলা উপদেষ্টা পরিষের সদস্য, লেখক-সম্পাদক অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস। বর্তমানে তিনি আন্দামানে রয়েছেন।

VoiceBharat News 1652188523 anadi

সেখান থেকেই জানান,”ছোটবেলা থেকে রবীন্দ্রনাথকে বুকের মাঝে রেখেছি। তাঁর কবিতা আমার কাছে দুর্মূল্য। সেই কবির জন্মদিনে যদি এমন পুরস্কার দেওয়া হয় কবিতার নাম করে, তা হলে তা সামগ্রিক ভাবে কবিতাকেই অসম্মান করে। তারই প্রতিবাদে আমি সাহিত্য অকাদেমির বাংলা উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।”

অনাদিরঞ্জন আরো বলেন, “আমি বেশ কিছু দিন ধরে দেখছি, বাংলা সাহিত্য কেমন ভাবে যেন রাজনীতির কবলে পড়ে গিয়েছে। এ বছর একটি নাটকের বই সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছে। সাহিত্য অ্যাকাডেমি তো নাটকের বইকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য নয়। তার জন্য তো সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি রয়েছে।”
সব মিলিয়ে এই পুরস্কার বাংলার সাহিত্য ও বোদ্ধামহলে রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

By Partha Roy Chowdhury (কিঞ্জল রায়চৌধুরী)

Partha Roy Chowdhury (Bengali: কিঞ্জল রায়চৌধুরী) is staff journalist VoiceBharat News. email: kinjol@voicebharat.com