এইমূহর্তে আন্তর্জাতিক অবস্থানের ক্ষেত্রে ভারতের উভয় সংকট। কূটনৈতিকভাবে তাই ‘মৌনম…লক্ষণম’ প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু মৌনতায় কি শুধুই সম্মতির লক্ষণ প্রকাশ পায় তা তো নয়! অসম্মতিও প্রকাশ পায়। কখনো আবার না বলতে চাওয়াকেও বোঝায়। ভারতের ক্ষেত্রে অবস্থাটা তৃতীয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তাই কোনো এক পক্ষকে সমর্থন দেওয়া কূটনৈতিক ভাবেই সম্ভব হচ্ছেনা। তবে গোড়া থেকেই যুদ্ধের বিরুদ্ধ বার্তাই উভয়পক্ষকে দিয়ে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা হয়তো তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।
তবে ভারতের এই নিরপেক্ষ অবস্থানকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন সোচ্চারে স্বাগত জানালেও ভুরু কোঁচকালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কারণটা বোঝা খুব শক্ত নয়।
সম্প্রতি রাশিয়ার উপদূত বাবুশকিন জানিয়েছেন, “রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ২বার ভারত যে স্বাধীন অবস্থান নিয়েছে তাকে স্বাগত জানাচ্ছি।” একই সঙ্গে এটাও জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বে ভারতের সাথে সম্পর্কে চিড় ধরবেনা এবং গুজরাটে আসন্ন ‘ডেফ এক্সপো’-য় রাশিয়া থেকে আমন্ত্রিতরাও উপস্থিত হবেন।
উল্টোদিকে কোনও পক্ষকেই সমর্থন না দেওয়ার ফলে রাশিয়ার দিকেই ঝুঁকে থাকার আষাঢ়ে মেঘ দেখছেন বাইডেন। কেননা আমেরিকা ভারতের গলায় অকুন্ঠ সমর্থন পেতে চায়। সেই অসন্তোষই খানিকটা প্রকাশ করে ফেলেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার যুদ্ধ প্রসঙ্গে ভারতের সাথে কিছুট মতানৈক্য রয়েছে, এটা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক সম্মেলনে বাইডেন বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এখনও পুরোপুরি সমাধান হয়নি।” সমাধান না হওয়া বলতে কোন ইঙ্গিত দিলেন বাইডেন? সেটাই প্রশ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে।
রাশিয়াকে পূর্ণ সমর্থন করা মানেই জুটবে যুদ্ধকামী রাষ্ট্রের তকমা, উপরন্তু অসন্তষ্ট হবে আমেরিকা। যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতের বিশ্ববাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র। আবার রাশিয়াকে সম্পূর্ণ বিরোধিতা করলে রাশিয়া তো রুষ্ট হবেই, তার ওপর সাঁড়াশির মতো চেপে ধরবে চিন ও পাকিস্তান — এই মূহুর্তে যারা পুতিনের পক্ষে রয়েছে। তাই ভীষণই মেপে পা ফেলতে হচ্ছে ভারতকে। রাষ্ট্রনীতিকরা এমনটাই মনে করছেন।