সম্প্রতি ‘কবিতা বিতান’ নামক কাব্যগ্রন্থের জন্য বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পুরস্কার পাওয় নিয়ে কটাক্ষে ট্যুইটার ভরিয়ে ফেললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
‘পথিক তুমি কি পথ হারাইয়াছো?’ বঙ্কিমচন্দ্রের এই উদ্ধৃতির খানিকটা নকল তরে ট্যুইটে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, “বাঙলার সাহিত্যসমাজ তুমি চেতনা হারাইয়াছো?”
সরাসরি না হলেও খানিকটা এই প্রশ্নবাণের মুখে পড়েই বাংলা অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান ব্রাত্য বসু বলেছেন, “সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে নিরলস কাজ করার পরও যাঁরা সারস্বত সাধনা, সাহিত্য সাধনা করে চলেছেন তাঁদের এই পুরস্কার অর্পণ করা হবে। সমস্ত শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক জানিয়েছেন প্রথম বছর এই পুরস্কার মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হোক।”
এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যিক কৃতী হিসেবে যোগ্যতার প্রশ্নটা কি এড়াতে চাইলেন ব্রাত্য বসু। বিদ্দ্বজ্জনের একাংশ সেই ইঙ্গিত করেছেন।
তবে শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ অবশ্য এখানেই থেমে থাকেনি। মমতার দুটি কবিতার পাতা ছবিসহ পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারী অপর একটি টুইটে লিখেছেন, ”ইতিহাস যখন একটি সভ্যতার বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করে কয়েক শতাব্দী পরে, তখন তাতে উল্লেখ থাকে না কোন উকিল, ব্যবসায়ী, কেরানি কত বড় অবদান রেখেছিলেন। আতস কাঁচের তলায় দেখা হয় কবি, সাহিত্যিক, ভাস্কর, চিত্রকর, শিল্পীদের কাজ।”
শুওেন্দুর আরো সংযোজন, ”বাঙালি তো এই জায়গায় শ্রেষ্ঠ।শিল্প কলা সংস্কৃতিতে মুনশিয়ানাই তো আমাদের পরিচয় বিশ্বের কাছে। সেই অহংবোধ কিনা রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিনে ধূলিসাৎ হলো। বাঙালির সত্ত্বা আজ লুণ্ঠিত !ধিক্কার জানাই তাদের যারা এই প্রক্রিয়ায় জড়িত। চাটুকারিতা কোন স্তরে পৌঁছালে এই ছড়া/কবিতার স্রষ্টাকে পুরস্কৃত করা হয়।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আদৌ সাহিত্য কিনা সে প্রশ্ন অনেকেই তুলছেন এবং তুলবেন। এজন্য বাঙালি সমাজে লেখক কবি বুদ্ধিজীবির অভাব নেই। তবে শুভেন্দু অধিকারী এখন যতখানি জোরের সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা বিচারে নেমেছেন, আগের তিনি, ঘাসফুল শিবিরে থাকলেও কি সেই সমালোচনা করতেন? এই প্রশ্নটাও নেহাৎ উড়িয়ে দেবার নয়।