আবারো গেরুয়া শিবিরে দলত্যাগের হাওয়া উঠেছে। সম্প্রতি এই হাওয়া তুলে দিয়েছেন অর্জুন সিং। তিনি এমনও দাবি করেছেন খুব শীঘ্রই অনেকে তৃণমূলে নাম লেখাতে চলেছেন। আর এই বাতাসের কানাকানিতে যাঁদের নাম বারবার ঘুরেফিরে আসছে তাঁরা সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরা এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়। এমনকি ঘাসফুল শিবিরের একাংশের মতে এই তিনজন ভেতরে ভেতরে তৃণমূলে যোগাযোগও রাখছেন!
খুব নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা, তবে বাবুল সুপ্রিয়, অর্জুন সিং সহ যাঁরাই এর আগে দল পাল্টেছেন তাঁরা সকলেই রাতারাতি পাল্টি খেয়েছেন। দল ছাড়ার আগে ঘুণাক্ষরেও আঁচ পাওয়া যায়নি।
দু’বারের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এখন ঘাসফুল শিবিরে। সেই রেশ থাকতেই অকল্পনীয়ভাবে তৃণমূল শিবিরে ফিরে গিয়েছেন সাংসদ অর্জুন সিং। এই ঘটনায় বিজেপি শিবিরে যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে সেটা বিজেপি নেতারাই স্বীকার করছেন। আর অর্জুনের পরেই দলবদলের সম্ভাবনায় যে তিনজনের নাম লিস্টের একেবারে ওপরে তাঁরা ৩ জন হলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, অনুপম হাজরা ও সৌমিত্র খাঁ। এরা সকলেই বিভিন্ন সময়ে দলের সমালোচনায় সরব হয়েছেন। ফলে জল্পনা আরো জোরালো হয়েছে।
অর্জুন-ঘনিষ্ঠ সৌমিত্র যে তাঁকেই অনুসরণ করবেন একথা ইঙ্গিতে অর্জুনই প্রকাশ করেছেন। এব্যাপারে সৌমিত্র খাঁর বক্তব্যটি লক্ষ্যনীয়। তিনি কখনোই এই দাবি সরাসরি অস্বীকার করেননি। বরং সৌমিত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ব্যক্তিগত ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান। আর অনুপম হাজরাকেও যে ঘাসফুলের ‘পিছুটান’ ফেরাবেনা এমন জোরালো গ্যারান্টি দেওয়া যায়না। বাকি রইলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। এসম্পর্কে কী বলছেন তিনি?
দলবদলের এই সম্ভাবনার কথা যদিও উড়িয়ে দিচ্ছেন লকেট। বাংলার এক বৃহত্তর সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, “তৃণমূল আমাদের দুর্বল করতেই এ সব রটাচ্ছে। বিজেপি আমায় যে সম্মান দিয়েছে, তার পরে দলবদল করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।” বাবুল সুপ্রিয়র দলবদলে বারংবার দুঃখপ্রকাশ করতে গিয়েছিল লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি যেন ঠিক মেনে নিতেও পারেননি। উপরন্তু বিজেপির রাজ্যনেতৃত্ব বিভিন্ন সময়ে তাঁর প্রতি কিছুটা অবহেলার মনোভাব দেখিয়েছে, তার বিরুদ্ধে লকেট ক্ষোভও চেপে রাখতে পারেননি। তাই কি তাঁর নাম উঠে আসছে?
সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছেনা। তবে লকেট খানিকটা কটাক্ষ তুলে প্রশ্ন করেন, “বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে গিয়ে কী পেয়েছেন? এখনও দ্বিতীয় একাদশেই রয়ে গিয়েছেন। তাছাড়া আমি যাবই বা কেন?”
এই ‘কেন’ র উত্তর যাঁরা দল বদলেছেন তাঁদের কাছে তো আছে নিশ্চয়ই। বাকিটা সময় বলবে।