সম্প্রতি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মানিক সাহা। ইতিমধ্যেই তাঁর পরিবারের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নুরুল ইসলামের পরিবার সম্পর্কে এক চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে। এমন সৌভ্রাতৃত্বের ঘটনা আজও নজিরবিহীন।
জানা যাচ্ছে, ১৯৪৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাখনলাল সরকার অর্থাৎ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর বাবা তাঁর অভিন্নহৃদয় বন্ধু নুরুল ইসলামের সাথে নিজের বাড়ি বিনিময় করেছিলেন। সেই থেকে বাড়ির যে অংশে মাখনলাল থাকতেন, সেটি আজও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। আরো বড় তথ্য, বাড়ির ইলেকট্রিক বিলও মাখনলাল সরকারের নামেই আসে!
পুত্র মানিক সরকার বর্তমানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী।
ব্রাহ্মনবাড়িয়ার কাজী পাড়ায় ছিল মাখনলাল সরকারের বসতভিটে। যেটি তিনি বন্ধু নুরুল ইসলামের সাথে বিনিময় করেন। বাড়ি সংলগ্ন জমিতে পরবর্তী প্রজন্ম দালানবাড়ি নতুন করে সাজালেও মাখনলালের স্মৃতিজড়িত অংশটিকে কোনোদিন পরিবর্তন করতে দেননি নুরুল ইসলাম। সন্তানদের আদেশ করেছিলেন মিটারের নামেও যাতে পরিবর্তন না করা হয়।
নুরুল ইসলামের কন্যা জানাচ্ছেন, “আব্বা বলতো, নামটা কোনোদিন মুছবেনা মা। ও আমার বন্ধু শুধু নয়, আমার পরম ভাই!”
তাঁর পুত্রও জানিয়েছেন, “আমার আব্বার বন্ধুত্বের স্বার্থে, তাঁদের ভালোবাসার স্বার্থে এই নাম আমরা কখনও বদলাইনি।”
বাড়ির পুরোনো অংশের কাঠামোটি এখনও সেই আগের মতোই। পরিবর্তন করা হয়নি ইলেকট্রিক বিল। এখনও তা মানিক সরকারের প্রয়াত বাবা মাখনলাল সরকারের নামেই আসে।
বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ের পক্ষ থেকেও জানানো হয়ছে, ‘এত বছর ধরে ওই নামেই আমরা বিল পাঠাচ্ছি। পরিবর্তনের জন্য বাড়ির পক্ষ থেকে কোনও আবেদনপত্র জমাও দেওয়া হয়নি।’
স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ –ইতিহাসের কত ঝড়ই বয়ে গিয়েছে অথচ নুরুল ইসলাম ও মাখনলাল সরকারের সম্প্রীতির চিহ্ন এখনও সেই পরিবারে ফল্গুধারার মতো বয়ে চলেছে। নুরুল ইসলামের কন্যা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ভাইয়া’ সম্বোধন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার কী বলছেন?