বাংলার মিষ্টির ঐতিহ্যকে টিঁকিয়ে রাখতে অনবদ্য এক পরিকল্পনা নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমানের বিখ্যাত সীতাভোগ-মিহিদানা, শক্তিগড়ের ল্যাংচা –এইসকল মিষ্টি জনে জনে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই নির্মাণ করিয়েছিলেন ‘মিষ্টি হাব’। তবে সম্প্রতি এক প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন তিনি জানতে পারলেন, ‘মিষ্টি হাব’ বন্ধ হয়ে গিয়েছে! জানতে পেরে রীতিমতো উদ্বিগ্ন তিনি।
পূর্ব বর্ধমান প্রশাসনের সাথে এক অনলাইন বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হঠাৎই জিজ্ঞাসা করেন, “ল্যাংচা হাব কেমন চলছে?”
খুব সঙ্কোচের সাথেই পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প ‘ল্যাংচা হাব’ অর্থাৎ ‘মিষ্টি হাব’ দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ। জেনে উদ্বিগ্ন হয়ে মুখ্যমন্ত্রী কারণ জিজ্ঞাসা করলে জেলাশাসক তাঁকে বলেন, “শক্তিগড়ের অনেক মিষ্টির দোকান মিষ্টি হাব -এর স্টল চালাতে রাজি হচ্ছেননা। লাভজনক না হওয়ায় স্টল বিলি করা সত্বেও বন্ধ করে দিতে হয়েছে।”
এই তথ্যে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন উদ্যমে ‘মিষ্টি হাব’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মিষ্টির দোকানগুলি যদি অরাজি হয়, তবে প্রয়োজনে স্বনির্ভর সংস্থার মাধ্যমে মিষ্টি তৈরি করানোর পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, বেশকয়েক বছর আগেরবার পূর্ব বর্ধমানের ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে মুখ্যমন্ত্রীর প্রিয় প্রকল্প ‘মিষ্টি হাব’ তৈরি করানো হয়। প্রথমদিকে শক্তিগড়, বর্ধমানের প্রতিষ্ঠিত দোকানদার সেখানে স্টল খুলেছিল। কলকাতা-আসানসোল বাসরুটেই মিষ্টি হাবের স্টল দেওয়া হয়েছিল। এই বাসযাত্রীরাই মূলত ছিল খদ্দের। তবে ব্যবসায়ীদের মতে বাদবাকি সময় স্টল ফাঁকা যায়।
উপরন্তু শক্তিগড় আগে পড়ে বলে অধিকাংশ ক্রেতাই সরাসরি সেখান থেকে মিষ্টি কিনে নেন। তাই ধীরে ধীরে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা উৎসাহ হারান। অবশেষে ৬ মাস আগে ‘মিষ্টি হাব’ সম্পূর্ণ বন্ধই করে দেওয়া হয়। এবার সেই হাব নতুন পরিকল্পনা, নতুন উদ্যোগ নিয়ে চালু করার নির্দেশই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।