বিজেপি নেতা রজনীশ সিংহের দাবি নস্যাৎ করে দিল হাইকোর্ট। তাজমহলের ২২টি বন্ধ ঘরে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি ও স্থাপত্য লুকোনো রয়েছে এই দাবিতে পিটিশন দায়ের করা হয়। রজনীশ সিংহ আরো দাবি জানিয়েছিলেন, আদালত ওই বন্ধ ঘরগুলি খুলে ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে’-র আধিকারিকদের পর্যবেক্ষণের অনুমতি দিক। কিন্তু সেই ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার’ দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বিজেপি নেতার এই দাবি নস্যাৎ করে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। মামলার রায়ে আদালত সাফ জানিয়েছে, তাজমহলের বন্ধ ঘরগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া যাবেনা।
আদালতের এই রায়কে সমর্থন জানিয়েছে ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া।’ তাঁরা ইতিমধ্যেই তাঁদের পেশ করা রিপোর্টে জানান, ঘরগুলি স্থায়ীরূপে বন্ধ ছিল না। সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কারণে কয়েকদিন আগেও খোলা হয়েছিল। এর সমস্ত নথিপত্র তাঁদের কাছে রয়েছে, সেইসব নথিতে তাজমহলের বন্ধ ঘরে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে এমন কোনও প্রমাণের উল্লেখ নেই। শিব মন্দিরের তত্ত্বটিকেও ভ্রান্ত বলে উড়িয়ে দিয়েছে ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া।’
কোনো কোনো পরিব্রাজক ও লেখক তাজমহলকে ‘তেজো মহালয়া’ বলে উল্লেখ করার ফলে একটা বিতর্ক আগে থেকেই দানা বেঁধেছিল। এই বিতর্ক অনুযায়ী, তাজমহল নামটি নাকি মুঘলদের দেওয়া। আসলে এটি একটি হিন্দু স্থাপত্য বা ‘তেজো মহেলয়া’ নামের শিব মন্দির ছিল! এই তত্ত্বটিকে ঘিরেই হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী বিতর্ক আরো জোরালো করতে চায়। তবে ইতিমধ্যেই ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে’-র দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আদালত এই দাবি ভ্রান্ত বলে খারিজ করে দিয়েছে।
‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার’ (এএসআই) প্রাক্তন প্রধান কেকে মহম্মদ বলেন, “তাজমহলের বেসমেন্টে মোট ১০০টি কক্ষ রয়েছে। যা দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে এএসআইয়ের উপর। আমি এএসআই আগ্রার প্রধান থাকাকালীন ওই কক্ষে গিয়েছি। সেখানে এমন কোনও ধর্মীয় বিষয় চোখে পড়েনি।” সুরক্ষার খাতিরেই স্বার্থেই তা পর্যটকদের বন্ধ করা রয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি।