ঘোষণা আগেই করেছিলেন। এবার বাস্তবায়িত করে দেখালেন। ভারতীয় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের অপমানের প্রতিবাদস্বরূপ ইসলাম ধর্ম ছেড়ে সস্ত্রীক হিন্দুধর্ম গ্রহণ করলেন জাতীয় পুরস্কার জয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক। নতুন ধর্ম তো বটেই, জানা যাচ্ছে তাঁর নতুন নাম গ্রহণের নেপথ্যেও রয়েছে ইতিহাস।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ভারতীয় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের মৃত্যুর পর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আলী আকবর। সেই পোস্টের কমেন্টে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই কিছু ইসলাম ধর্মাবলম্বী লোকজ ঠাট্টাতামাশা আরম্ভ করে। ক্রুদ্ধ পরিচালক এই লোকজনকে ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যা দেন।
একটি প্রকাশ্য ভিডিও করে সেইদিনই তিনি ঘোষণা করেন পিতৃপুরুষের কাছে পাওয়া ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ করে হিন্দুধর্ম গ্রহণ করবেন। কারণ, প্রথমে তিনি একজন ভারতীয় , ধর্মের স্থান তারপরে। বলেছিলেন, “আমি যে জামা নিয়ে জন্মেছিলাম, তার একটা টুুকরো আমি ফেলে দিচ্ছি।”
এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেই ধর্মের জামা ফেলেই দিলেন আলী আকবর ও তাঁর স্ত্রী লুসিমা। সাদা ও গেরুয়া বস্ত্র পরে, যাগযজ্ঞ করে, একেবারে আনুষ্ঠানিক আচার রীতি মেনেই হিন্দুধর্ম নিলেন সস্ত্রীক আলী আকবর। এই অনুষ্ঠানের ছবি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা প্রতীশ বিশ্বনাথ।
ছবি শেয়ার করে প্রতীশ বিশ্বনাথ বলেন, “ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল। এবার রাম সিংহনের চরিত্রে আলী আকবর।” হ্যাশট্যাগ দিয়ে ‘ঘরওয়াপসি’ লিখতেও ভোলেননি তিনি।
হ্যাঁ, চলচ্চিত্র পরিচালক আলী আকবরের নতুন নাম রাম সিংহন। পাশাপাশি এই নামকরণের নেপথ্যেও এক কাহিনীর কথা জানা যাচ্ছে। কিংবদন্তি অনুযায়ী, আশি বছর আগে মালাবার অঞ্চলে ঠিক এইভাবেই জনৈক ব্যক্তি ইসলাম ত্যাগ করে হিন্দু হয়ে নিজের নাম রেখেছিলেন রাম সিংহন। এরপরে কিছু কট্টরপন্থি ইসলামি জনগণর হাতে নিহত হয়েছিলেন তিনি ও তাঁর ভাই। রামের পরিবারের লোকজনকেও হাপিস করে দেওয়া হয়। এই নতুন নাম নিয়ে আলী আকবর কি নতুন করে একটা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেন? প্রশ্নটা উঠছে। তবে এই ঘটনায় আলী আকবরের ঢালাও প্রশংসায় মেতেছেন প্রতীশ বিশ্বনাথ। তিনি বলেছেন, “বর্তমানে ইসলাম প্রজন্মকে দেখে বেশ ভালো লাগছে। এতদিনে তারা অনুভব করছে, কীভাবে তাদের পূর্বপুরুষদের মুসলিমরা বলপূর্বক ইসলাম ধর্ম নিতে বাধ্য করেছিল।”
কতটা জোর করে, আর কতটাই বা স্বেচ্ছায় বাধ্য হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিল হিন্দু নিম্নবর্গীয় সম্প্রদায়! সেটা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক রয়েছে। তবে আলী আকবরের এই ধর্মান্তর যখন স্বেচ্ছায়, তখন বিশ্বহিন্দু পরিষদ যে স্বাগত জানাবে এতে আশ্চর্যের হওয়ার কিছু নেই।