দ্য কাশ্মীর ফাইলস, সিনেমাটি যারা দেখেননি বা সাধারণত সিনেমা দেখেননা এমন মানুষও সিনেমাটির নাম এতদিনে জেনে গিয়েছেন। হয়তো মনে মনে সিনেমাটি সম্পর্কে একটা সাজানো গোছানো মতামত তৈরিও করে ফেলেছেন, পাঁচজনের সাথে আলোচনায় অংশ নিতে হবে শুধু সেই কারণেই!
এর মূলে রয়েছে চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে বাড়াবাড়ি রকমের প্রচার। রিলিজের ঠিক পরেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং সিনেমাটির প্রযোজক ও পরিচালকের ‘ট্যুইটোকারী’ বক্তব্যের সংলাপ থেকে বেশ বোঝা যায় সিনেমাটিকে নিছক সিনেমা না মনে করে অন্যকিছু বোঝানোর প্রবণতা ভীষণরকম বেশি। একাধিক ফিল্মি তারকাও এই সিনেমার পক্ষে বা বিপক্ষে সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন। তাদেরই সমান্তরাল অবস্থানে দাঁড়িয়ে একেবারে অন্যরকম প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী।
প্রথমত নওয়াজউদ্দিন গোড়া থেকেই সিনেমাটি সম্পর্কে নিরপেক্ষ এবং নিরুত্তাপ। উল্টোদিকে একটি সিনেমা নিয়ে এত বাড়াবাড়ি উত্তাপ কেন? এই প্রশ্নই কিছুটা প্রতিফলিত হয় তাঁর বলার ধরণে। বরং সিনেমাটিকে সিনেমার জায়গায় রেখেই দেখতে বিশ্বাসী তিনি, এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। তবে সেটা সরাসরি বলেননি। একটা গুগলি ছেড়েছেন।
অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন দ্য কাশ্মীর ফাইলসের পক্ষে না বিপক্ষে এই প্রশ্নটার ধারই মাড়াননি। বলেছেন, “প্রতিটি পরিচালকেরই চলচ্চিত্র নির্মাণের আলাদা স্টাইল এবং দৃষ্টিভঙ্গি থাকে। তিনি সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই সিনেমা তৈরি করেছেন, এটা ভালোই। ভবিষ্যতে অন্যরাও তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সিনেমা বানাবেন।”
পরিচালকের ‘নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি’-র ব্যাপারটায় জোর দিয়েছেন নওয়াজ। তাঁর মতে বাস্তবঘটনা দ্বারা নির্ভর ছবির ক্ষেত্রেও এই ব্যাপারটা কাজ করে — যেটাকে ‘ইন্টারপ্রিটেশন’ বলা যায়। এটা থাকবেই, এটাকে এড়ানো যায়না, বিশ্বাস অভিনেতার। কিন্তু কাশ্মীর ফাইলস চলচ্চিত্রটি নিয়ে তাঁর মতামত কী? আদৌ কি ছবিটা দেখার ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি? এই প্রশ্নের উত্তরেই গুগলি ছেড়েছেন বলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী।
তিনি উত্তরে জানান, “মানুষজন তো দেখছে সিনেমাটা, তাই আমিও দেখব।” এই নিরুত্তাপ ভঙ্গিতেই সমস্ত উত্তর প্রচ্ছন্নভাবে লুকিয়ে। যেটা ধরতে অসুবিধা হয়না –পক্ষে হোক বা বিপক্ষে, সত্য হোক বা বিকৃত সত্যের অতিরঞ্জন, একটা সিনেমা আসলে সিনেমাই। তাকে সিনেমা হিসেবেই পর্যালোচনা করা উচিত। ছবি রিলিজের পর এই প্রথম কোনো অভিনেতা এই জরুরি বক্তব্যটি রাখলেন।