একিদিকে যখন প্রতিরক্ষায় উন্নত প্রযুক্তির কৌশলগত যোগ্যতার দিকে তির্যক প্রশ্ন তুলেছে পাকিস্তান, ঠিক সেইসময়েই স্বভূমি গুজরাতের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা রক্ষায় প্রযুক্তির ওপর জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শিল্প সম্মেলন, পঞ্চায়েত মহাসম্মেলন সহ একাধিক কর্মসূচি নিয়ে দুদিনের সফরে গুজরাত গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তবে এর নেপথ্যে যে আগামী নির্বাচনে গুজরাতের প্রস্তুতেপর্বও জড়িত সেটা আন্দাজ করাই যাচ্ছিল। কেননা গতবারের বিধানসভা নির্বাচনে গুজরাতে ভালো পরিমাণ ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস। তাই কোনওক্রমেও যাতে এবার হাওয়া ঘুরে না যায়, প্রধানমন্ত্রী নিজেই রণক্ষেত্রে নেমে মহড়া দিয়ে এলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
প্রথম দিন গান্ধীনগরের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের গ্রামীন বিকাশ ও অগ্রগতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১৩ মার্চ সর্দার বল্লভভাই পাটেল স্টেডিয়াম পর্যন্ত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তার আগেই ছিল গান্ধীনগরে রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন। এই বৃহত্তর কাজকে সামরিক খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে নিরাপত্তার ক্ষেত্রটি ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে। বিশেষ করে বেসরকারি নিরাপত্তা ক্ষেত্র ক্রমশ বাড়ছে। আমাদের লক্ষ্যই হলো ওই ক্ষেত্রটিকে আরো বিস্তারিত করা।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতিতে বিশ্বপ্রেক্ষাপটে ভারতের অবস্থান উল্লেখ করে এর আগেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বেসরকারি পুঁজিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এবার তিনি এই ক্ষেত্রটিকে প্রশস্ত করার সাথে সাথে ‘প্রযুক্তি শিক্ষার’ ওপর বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “প্রযুক্তি এখন নিরাপত্তা ব্যবস্থার অন্যতম অঙ্গ হয়ে উঠেছে। তাই আজ নিরাপত্তা বাহিনীতে থাকার জন্য শুধু শারীরিক প্রশিক্ষণই যথেষ্ট নয়, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সক্ষম ব্যক্তিরাও নিরাপত্তায় ভূমিকা পালন করতে পারেন।”
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর গুজরাতে থাকাকালীনই বন্ধুদেশ রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম প্রযুক্তিগত বিচ্যুতির কারণে পাকিস্তানে মিসাইল নিক্ষেপের ঘটনাটি ফলাও করে প্রকাশ করে। সেইসময়েই গুজরাতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বারংবার উল্লেখ করছিলেন, “এটা নিছক পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় নয়। এটি একটি প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়।” দুইয়ের মধ্যে তফাৎ বোঝাতে প্রযুক্তি শিক্ষণের ওপর প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্ব আরোপ ভারতের যোগ্যতার দিকে পাকিস্তানের আঙুল তোলারই জবাব দিতেই চাইলেন কি?