২৮ ফেব্রুয়ারি কাঁথিতে পুরনির্বাচন। ঠিক এইসময়েই দলীয় প্রচারে মুসলিম মহল্লায় ঢুঁ মারতে গেলেন ‘সনাতনী’ বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। অথচ রাজনৈতিক মহলের প্রায় সকলেই জানেন ঘোরতর মুসলিম বিরোধী শুভেন্দু। কাঁথি তাঁর নিজস্ব এলাকা, শুধু তাই নয়, পারিবারিক সূত্রে দীর্ঘকাল ধরেই ‘অধিকারী গড়’ বলেও পরিচিত অনেকের কাছে। সেই নিজের এলাকার মুসলিম মহল্লাতেই শুভেন্দুর যে বহুদিন দেখা মেলেনি, একটি ছোট্ট ঘটনাই সেদিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। ফলে সংখ্যালঘুদের সমর্থন পেতেই যে সেখানে হাজির হয়ে শুভেন্দু যেরকম মাখামাখি শুরু করেছেন তা শুধু অবাক করা নয়, রীতিমতো দৃষ্টিকটু বলেও অনেকে মনে করছেন।
কাঁথির ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী অরূপ বিশ্বাসেদ সমর্থনে প্রচারে বার হয়ে এদিন প্রথমেই রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে শ্রীরামকৃষ্ণকে নমস্কার জানিয়ে মিশনের মহরাজের কাছ থেকে মিশনের হালহকিকতের খবর নেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তারপর বাইক মিছিল সহকারে এলাকার মানুষজনের কাছে খবরাখবর নিয়ে প্রার্থীর জন্য ভোট প্রার্থনা করেন। এছাড়াও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর হয়ে তিনি স্থানীয় মুসলিম মহল্লায় হাজির হন। এখানে এসেই শুভেন্দু এমন আচরণ শুরু করেন যেন কতদিনের আত্মীয়। তবে মুসলিম মহল্লার এই নিকট আত্মীয় তুল্য মানুষদের কাছে তিনি যে বহুদিনই খবরাখবর নেননি, সেটা এক বয়স্কা মহিলার আন্তরিক সম্ভাষণের মধ্যেই বেরিয়ে এসেছে।
ওই বৃদ্ধা শুভেন্দুকে প্রশ্ন করেন, “আমাদের ছেড়ে কেন চলে গেছিলেন? খুব খারাপ লেগেছিল। এখন এসেছেন, ভালো লাগছে।” বৃদ্ধার এই সরল স্বীকারোক্তি থেকেই বোঝা যায় শুভেন্দু অধিকারীকে তিনি বহুবছর পর মহল্লায় দেখতে পেলেন। সম্ভবত শেষবার যখন দেখেছিলেন তখন শুভেন্দু তৃণমূলে ছিলেন, এমনটাই অনেকের আন্দাজ। তবে পুরনির্বাচনে ভোট পাওয়ার জন্য এই মুসলিম মহল্লার মানুষদের ব্যাপক সমর্থন যে ভীষণ প্রয়োজন এটা শুভেন্দুর বোধগম্য হয়েছে বলেই একাংশ মনে করছেন।
এই প্রসঙ্গে পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক উত্তম বারিক শুভেন্দুকে লক্ষ্য করে বলেছেন, “উনি হলেন বহুরূপী, বসন্তের কোকিল। কখন কাকে কী বলেন আর কী করেন নিজেই বুঝতে পারেননা। এখন পুরভোটের ঠেলায় পড়ে সংখ্যালঘুদের সমর্থন ফিরে পেতে চাইছেন।”