বাবা কিনে দিয়েছে ফৌজির পোশাক। যেমন খুশি সাজো প্রতিযোগিতার জন্যই কি! তাই হবে। কিন্তু তার ওসব প্রতিযোগিতায় মন নেই। বছর চারেকের এই ছোট্ট শিশু খাঁকি ইউনিফর্ম আর হাতে স্টেনগান নিয়ে একাই যুদ্ধে নেমে পড়ল। আর কিছু বুঝুক বা না বুঝুক এটা অবশ্যই বুঝে ফেলেছে, এই পোশাক পরে দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। তাই সক্কালবেলায় পণ করল,শত্রুদের নিকেশ করতে হবে।

পার্কসার্কাসের নিকটস্থ রেলগেট। উঁচু রেললাইনের পাড় ঘেঁষে নেমে গিয়েছে সিঁড়ি। ঝুপড়ির আড়ালে এই সিঁড়িতে বসেই গাঁজায় সুখটান দেয় বস্তির যুবকরা। দুচারজনই তেমনই বসে ফুঁকে নিচ্ছিল। আর ওদের পাশ কাটিয়েই সিঁড়ি বেয়ে উঠে এল তিলজলা অঞ্চলের কোনও এক বস্তিনিবাসী খুদে সৈনিক। থেমে যাওয়া ট্রেন থেকে অনেকেই যে তাকে লক্ষ্য করছে খেয়াল নেই। আপন মনে সে তখন অদৃশ্য সহযোদ্ধাদের কড়া নির্দেশ দিয়ে চলেছে। শৈশবের এই স্পার্টাকাসকে দেখে মনে হচ্ছিল দেশের শত্রুদের এইমাত্র সে চিনে ফেলেছে! জেনে ফেলেছে গুপ্ত ডেরার ঠিকানা। তাই এই অতর্কিতে হামলা বোল!

একবার সিঁড়ি বেয়ে উঠে উঁকি মেরে দেখছে, পরক্ষণেই দুধাপ নেমে স্টেনগান হাতে পজিশন নিয়ে ফেলছে। এক ট্রেনযাত্রীর সাথে চোখাচোখি হতেই মুখময় ফুটে উঠল অমলিন হাসি। আর তারপরেই স্টেনগান উঁচিয়ে ঠাঁই ঠাঁই ঠাঁই!

এমন করেই কি দেশের শৃঙ্খল ভাঙার প্রথম স্বপ্ন দেখেছিলেন নেতাজি? প্রজাতন্ত্র দিবসের এই প্রাক্কালে সঠিক পোশাকই বেছে নিয়েছে আমাদেরই শহরতলীর এক ছোট্ট সৈনিক। হয়তো এই পোশাকের টানেই একদিন সে ভারতীয় সেনাফৌজে নাম লেখাবে! কে বলতে পারে ওর মধ্যে ভবিষ্যতের বিপিন রাওয়াত লুকিয়ে নেই!