সিকির দুটো পিঠ থাকে। কখন যেন অজান্তেই হেড আর টেল একাকার হয়ে যায়। তেমনই যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ভারত-পাকিস্তান বিভাজনরেখা মুছে গেল আচমকাই, অপ্রত্যাশিত ভাবে! ইউক্রেন-সঙ্কটে পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের প্রাণ বাঁচালো ভারতীয় পড়ুয়া-ব্রিগেড। জানালো সংবাদ সংস্থা এএনআই।
এ যেন ঠিক তারা খসার মূহুর্ত। চোখের পলকে উল্টেপাল্টে দিচ্ছে রোজকার দুনিয়া। কাল যা ছিল অঘটন, আজ সেটাই মনে হলো আশু প্রয়োজন। বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে ভারতের তিরঙ্গার আলিঙ্গনে সুরক্ষা বলয় তৈরি করে ফেলল পাকিস্তান। খারকিভ থেকে প্রাণ বাঁচাতেই মরিয়া ছিল সবাই। ভারতীয়দের সাথেই আটকা পড়েছিল পাকিস্তানের অনেক শিক্ষার্থী। ইউক্রেন থেকে রোমানিয়া হয়ে বুকারেস্টে পৌঁছয় ভারতীয় পড়ুয়াদের একটা দল, যাদের সাথে মিলিতভাবেই ভারতের জাতীয় পতাকার আশ্রয় নিল পাকিস্তানের পড়ুয়া দল।
সেখানকার ছাত্ররা জানাচ্ছেন, “ভারতের জাতীয় পতাকা সঙ্গে থাকার জন্যই তাড়াতাড়ি সীমান্ত পার হবার অনুমতি পায় পাকিস্তান ও তুরস্কের পড়ুয়ারা। আমরা বাড়ির পর্দা ছিঁড়ে রঙ মাখিয়ে তিরঙ্গা তৈরি করেছিলাম।”
এক্ষেত্রে ভারত সরকারের অকুণ্ঠ প্রশংসাও করেছে পড়ুয়ারা। তাদেরই একজনের মতে, “সরকার আমাদের সাহায্য করেছে। তবে উদ্ধারকারী বিমানের সংখ্যা আরো বাড়ালে ভালো হয়। রোমানিয়ায় ভারতীয়রা কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। ভারতীয় দূতাবাস এই বিষয়ে পদক্ষেপ করলে ভালো হয়।”
গতকালই ইউক্রেন ছেড়েছেন ১২ হাজার পড়ুয়া। বাকিদের বৃহৎ অংশ কনফ্লিক্ট জোনে আটকে রয়েছেন। শীঘ্রই তাদের ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শৃঙ্গলা। ইউক্রেনের আকাশ সীমা নিষিদ্ধ হওয়ায় প্রতিবেশি দেশ রোমানিয়া, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়া ঘুরে ভারতীয়দের ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। তারই মধ্যে ভারতের পতাকা সামনে তুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পারাপার পাকিস্তানি শিক্ষার্থীরাও। ভারতের পড়ুয়াদের এই উদার মনোভাব বিশেষভাবে সচেতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।