২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকেই পশ্চিমবঙ্গে দলবদলের হিড়িক লেগে যায়। তবে সেইসময়ে বিজেপির পালে বাতাস জোরালো ভেবে অনেকেই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপির খাতায় নাম লেখান। তবে পরবর্তী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন থেকে পাল্টাহাওয়া বইতে শুরু করে। দলে দলে গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলে ফেরত আসতে শুরু করেন। সম্প্রতি এই দলবদলকে একটি রোগের সাথে তুলনা করে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল বিধায়ক অভিনেতা চিরঞ্জিত। তাঁর এই বক্তব্য সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
শুরু হয়েছিল বাবুল সুপ্রিয়কে দিয়ে। বাবুল অবশ্য বিজেপি ত্যাগ করেই তৃণমূলে ফেরেন। তাঁর দেখাদেখি পুরোনো তৃণমূলত্যাগীরাও পুনরায় ঘাসফুল শিবিরে ফিরে আসতে শুরু করে। এই তালিকায় সাম্প্রতিক সংযোজন অর্জুন সিং। তবে দলবদল নিয়ে বিরূপ মনোভাব নতুন নয়। দলবদল করে যাঁরা ফিরে আসছেন, তাঁদের প্রতি এর আগে সোচ্চার হয়েছিলেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। দলে ফিরলেও প্রায়শ্চিত্তের উল্লেখ করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অভিনেতা বিধায়ক চিরঞ্জিত সম্প্রতি একটি অভিনব প্রস্তাব দিয়েছেন যা রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ জনগণ, সকলেরই মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। তাঁর মতে দল পাল্টে যাঁরা আসছে অন্তত একবছর তাঁদের বসিয়ে রাখা উচিত।
অর্জুন সিংয়ের ফেরা নিয়ে কটাক্ষ করে চিরঞ্জিত বলেন, “কিছুদিন আগেই উনি বলছিলেন তৃণমূলের জন্য উন্নয়ন আটকে আছে। এখন জাস্ট রিভার্স করে উল্টো কথা বলছেন। এই পরিবর্তনটা সত্যিই হাস্যকর লাগে।”
এরপরেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে এক অভিনব প্রস্তাব রেখেছেন তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত। তিনি বলেন, “দলবদলকারীদের অন্তত একবছর বসিয়ে রাখা উচিত। একটা লে অফ করে দেওয়া। একটা ট্রান্সিটারি ফেজে এক বছরের জন্য বসে থাকতে হবে। সেইসময়ে কোনও পদ তাঁকে দেওয়া হবেনা। দল ছেড়ে এসেই টিকিট পেয়ে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন, এই টার্মসটা আগে থাকতে ঠিক করে নিয়েই তাঁরা দল ছেড়ে এসে যোগ দিচ্ছেন। এই প্রসেসটাকে ডিলে করে দেওয়া উচিত। একমাত্র তাহলেই দলবদলের ‘রোগ’ কিছুটা প্রশমিত হতে পারে বলে মনে হয়।”
হ্যাঁ স্পষ্টতই দলবদলকে একটা ‘রোগ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন চিরঞ্জিত। যার ওষুধও তিনি নিজেই বাতলেছেন। এখন সেটা কতদূর কার্যকর করা হয়, আদৌ কার্যকর হয় কিনা সেটাই দেখার।