বক্তব্যের রুচিহীনতা যদি কোনো রোগ হয় তবে নিঃসন্দেহে সেই রোগে আক্রান্ত কিছু রাজনৈতিক নেতানেত্রী, যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম দিলীপ ঘোষ। মনোবিজ্ঞান সেই ধারণাকেই প্রতিপন্ন করে। গত বুধবার বাঁকুড়ায় আবার স্বমূর্তিতে আত্মপ্রকাশ করলেন দিলীপ ঘোষ। রোগের প্রকোপ এতটাই যে, কাকে কোন ভাষা প্রয়োগ করছেন সেবিষয়ে পুরোই জ্ঞানকান্ড হারিয়ে বসেছিলেন।
বুধবার বাঁকুড়ার মাচানতলায় ‘ভয় মুক্ত বাংলা,হিংসা মুক্ত রাজনীতির’ কর্মসূচি ছিল বিজেপির। মূল্যবৃদ্ধির জন্য রাজ্যসরকারকে দায়সহ একাধিক দাবিতে বাঁকুড়ার হিন্দু হাইস্কুলের মাঠ থেকে মিছিল করে পৌঁছে বাঁকুড়ার মাচানতলায় ‘আকাশ মুক্তমঞ্চে’ আয়োজিত একটি সভায় অংশগ্রহণ করেন দিলীপ ঘোষ।
এই সভামঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়েই আলুর দাম বাড়ার জন্য রাজ্যকে দোষারোপ করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “আলু ১৫ টাকা থেকে আজ ৩৫ টাকায় পৌঁছে গেছে। আলু কি ইউক্রেন থেকে আসে, না রাশিয়া থেকে আসে?”
পাশাপাশি পেট্রোলের মূল্যুর প্রসঙ্গ টেনে তুলনা দিয়ে বলেন, “৯০ টাকার পেট্রল যদি ১১৫ টাকা হয়, তাহলে দাম বাড়ল ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। আর আলু ১৮ টাকা থেকে ৩৬ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ ১০০ শতাংশ দাম বেড়েছে। পেট্রল কেউ খায় না, কিন্তু আলু সবাই খায়। এখন তৃণমূল নেতাদের ধরে পিছনে একটু পেট্রল দিয়ে দিন। দেখুন তাঁরা কেমন দৌড় মারবে। আমরা ছোট বেলায় বদমায়েশি করে কুকুরের পিছনে পেট্রল দিয়ে দিতাম।”
বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষের শেষোক্ত বক্তব্যটিই রাজনৈতিক মহলে আপত্তির ঝড় তুলেছে। তাঁর এহেন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে বাঁকুড়ার তৃণমূল জেলা সংগঠনের চেয়ারম্যান শ্যামল সাঁতরা বলেন, “এর চাইতে খারাপ বার্তা মানুষের কাছে আসতে পারে না। এতেই বোঝা যায় বিজেপির সংস্কৃতি কোথায় পৌঁছেছে।”
তৃণমূল নেতাদের কুকুরের সাথে তুলনা! এই রুচিহীন বক্তব্যের কারণে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তুলেছেন তিনি।
শাসক দলকে লক্ষ্য করে দিলীপ ঘোষের কুরুচিকর মন্তব্য নতুন ঘটনা নয়। এমনকি তিনি যে প্রকাশ্যে অশালীন ইঙ্গিত করতে গিয়ে নারী পুরুষের তফাতটুকুও রাখেনা, অতীতে সেই উদাহরণ পাওয়া গিয়েছে। বাঁকুড়ার বক্তৃতাসভায় আরো একবার তারই পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেখা গেল।