কোভিড সংক্রমণের ঢেউয়ের শঙ্কা এখনও বিদায় নেয়নি। তারই মধ্যে আবির্ভাব ঘটল আরেকটি নতুন অসুখের, যার নাম মাঙ্কি পক্স। কী এই মাঙ্কি পক্স?
মে মাসের গোড়ায় ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম মাঙ্কি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান মেলে। এরপর মিলেছে আমেরিকা ও অন্যান্য দেশেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত কয়েকজন রোগীর খোঁজ পাওয়া যায়।
ডাক্তার এবং বিশেষজ্ঞরা এই অসুখ নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত। বাঁদরের শরীর থেকে এই অসুখ ছড়ালেও ইঁদুর, কাঠবিড়ালির মতো প্রাণী অর্থাৎ যাদের ধারালো দাঁত রয়েছে সেইসব পশুর মাধ্যমেই অধিক সংক্রমিত হয় মাঙ্কি পক্স।
এটি পশুবাহিত রোগ। এই রোগে আক্রান্ত পশু আঁচড়ালে বা কামড়ালে এমনকি তাদের কাছাকাছি এলেও সংক্রমণ হতে পারে। সারাবিশ্বের এই মূহুর্তের পরিস্থিতি দেখে চিকিৎসকরা আঁচ করছেন, পশুবাহিত অসুখ মাঙ্কি পক্স অতিমারির চেহারা নিলেও নিতে পারে।
যদিও সংক্রমণের খবর ছড়ানোর সাথেসাথেই দ্রুত সতর্কতা অবলম্বন করছে গোটা বিশ্বের চিকিৎসক মহল।
আবার চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের একাংশ ততটাও বিপদের সম্ভাবনা নেই বলেই মতামত দিয়েছেন।
মাইক্রোবায়োলজিস্ট সৌগত ঘোষ বলছেন,”এটা কোনো নতুন রোগ নয়। আফ্রিকায় হত। এখন ইওরোপে ঢুকেছে। সতর্ক হওয়া দরকার। চিকেন পক্সের প্রতিরোধক এই রোগে কিছুটা কাজ করে।”
ব্রিটেনের এক বিখ্যাত ওষুধ নির্মাণকারী সংস্থা জানিয়েছে মাঙ্কি পক্সের ওষুধ ও ভ্যাক্সিন যথেষ্ট পরিমাণে সংগ্রহে রাখা শুরু হয়ে গিয়েছে । ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের ঘনিষ্ঠ জনদের শরীরে প্রয়োগের মাধ্যমে সেই ভ্যাক্সিন পরীক্ষা করা হবে।
ভাইরাস আক্রান্ত পশুদের মাধ্যমেই অসুখটি ছড়ায় বলে ডাক্তারদের অভিমত। কামড় ছাড়াও আক্রান্ত প্রাণীদের রক্ত, রক্তরস এবং লোম থেকেও অসুখ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।
মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস রয়েছে এমন পশুর মাংস খেলেও রোগ ছড়াতে পারে। করোনার মতোই মাঙ্কিপক্সও মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকরা।
ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত বিছানা ও কাপড়ের জিনিসপত্র হাঁচি ও কাশি থেকেও রোগ ছড়ানো সম্ভব। বিপদ থাকছে ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সাথে যৌন সংসর্গেও।
এই অসুখের উপসর্গ হিসেবে শরীরে বসন্তের মতো গুঁটি, জল ফোসকা বের হয়। তার সঙ্গে জ্বালা যন্ত্রণাভাব ও কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, মাথা এবং সারা গায়ে ব্যথা অনুভব হয়ে থাকে।