কিছুদিন আগেই এক সরকারি নোটিশ জারি করে বলা হয় এবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম নীল-সাদা করা হবে। স্কুল ইউনিফর্মের ক্ষেত্রে স্কুল অনুযায়ী বিভিন্নতা আর থাকবেনা। একই সঙ্গে এটাও জানানো হয়েছিল, ইউনিফর্মে সরকারের নিজস্ব ‘বিশ্ববাংলা’ লোগো দেওয়া থাকবে।সরকারি এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেই এক আইনজীবি হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন।
আপত্তিটা আগেই উঠেছিল। অনেক স্কুলকর্তৃপক্ষই রাজ্যসরকারের এই সিদ্ধান্তে সহমত হননি। শিক্ষক সংগঠনগুলিও আপত্তি জানিয়ে সরব হয়েছিল। তাঁদের বক্তব্য ছিল এমন নিয়ম করা হলে পোশাক দেখে স্কুলগুলিকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যাবেনা, একটি স্কুলের পড়ুয়া অন্য স্কুলে গিয়ে হাজির হলেও পার্থক্য করবার উপায় থাকবেনা। তবে এইসকল ‘না’-এর জবাবে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রক পোশাকের খাতে অর্থখরচ নিয়ন্ত্রণকেই প্রাধান্য দিতে চায় বলে জানিয়েছিল।
সম্প্রতি এর বিরুদ্ধে আদালতের স্থগিতাদেশ দাবি করে মামলাকারী আইনজীবি বলেছেন, “এর ফলে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।” এতদিনকার ঐতিহ্যের পক্ষে এই সিদ্ধান্ত অবমাননাকর বলেও দাবি করেছেন তিনি। পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছেন, “স্কুলের পোশাকে ‘বিশ্ববাংলা’ লোগো দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন?”
শিক্ষক ও চিকিৎসক সংগঠনের বিরোধিতার সাথে সাথে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহযোগী সম্পাদক স্বপন মন্ডল বলেন, “বাংলার শিক্ষা সংস্কৃতির ওপর দখলদারি চালাতে চাইছে রাজ্যসরকার।”
এদিন উচ্চ ন্যায়ালয়ের কাছে আইনজীবিও সেই এক সুরেই বিরোধিতা জানিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন–কেন রাজ্যসরকারের এমন সিদ্ধান্ত? জবাব দিতে হবে। যদিও ইতিমধ্যেই রাজ্যসরকার এই নিয়ম বদলের কারণ দেখিয়ে বলেছে, রাজ্যের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে দিয়ে সরকারি পরিচালনায় পোশাক তৈরি করানোর জন্যেই এমন সিদ্ধান্ত। এর ফলে ইউনিফর্ম নির্মাণের খরচ অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলেই মনে করছে পর্ষদ ও রাজ্যসরকার।