সিএএ আন্দোলনকারীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সরকারি সম্পত্তি। এই অজুহাতে আন্দোলনরত মানুষদের উপর জরিমানা নির্ধারিত করেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার।সেই মর্মে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে নোটিশও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু একটু নাড়াঘাঁটা করতেই কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসে।
প্রমাণ হয়, এই জরিমানা শুধু অন্যায্যই নয়, এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে সরকারি দুর্নীতি। এবার সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপেই বন্ধ হল এই দুর্নীতিমূলক ষড়যন্ত্র।
সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের উপর সরকারি সম্পত্তি বিনষ্টের অভিযোগে তাদের একটি লম্বা তালিকা তৈরি করে, তাদের ওপর জরিমানা আরোপ করে নোটিশ পাঠায় যোগী সরকার। কিন্তু বাস্তব নথি বলছে এই তালিকায় এমন ব্যক্তির নাম রয়েছে যিনি ৬ বছর আগেই মারা গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আন্দোলনকারী অর্থাৎ সম্পত্তি বিনষ্টকারীদের মধ্যে ৯০ বছরের বেশি বয়সী মানুষও রয়েছেন বলে প্রকাশ পেয়েছে। যে তথ্যের সামনে তীব্র অস্বস্তির মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার।
সম্প্রতি পারভেজ আরিফ টিটু নামের এক ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দিয়েছেন, যেখানে এমন সব তথ্য তুলে ধরেছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতি ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি সূর্যকান্তের বেঞ্চে এই মামলা দায়ের হয়। হাতেগরম তথ্য পেয়ে বিচারপতি সরাসরি সরকারকে নির্দেশ দেন, “১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হল। তার মধ্যেই এসব বন্ধ করতে হবে।”
সরকারি পক্ষের আইনজীবির সাফাই শুনতে রাজি হয়নি সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিরা রায়দানের সময়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই অপকর্মের তীব্র নিন্দা করে বলেন, “সরকারই তো এখানে অভিযোগকারী, প্রসিকিউটর এবং বিচারকের মতো আচরণ করেছে। অবিলম্বে জরিমানা আদায়ের এই প্রক্রিয়া বন্ধ হোক। তা নাহলে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে আমরাই এ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেব।”
এই মর্মে বিবৃতি দিয়ে বিচারপতি ডি.ওয়াই.চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি সূর্যকান্ত সরকারকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এরপর সরকারি আইনজীবি স্বীকার করতে বাধ্য হন — আদালতের নির্দেশই শিরোধার্য।