কিংবদন্তী শব্দটাই লতা মঙ্গেশকরের জন্য যথেষ্ট নয়। এই শব্দের যদি কোনও মূর্তরূপ হয়, তবে তা এই শিল্পীর ক্ষেত্রেই একমাত্র খাটে। ‘ছোটবেলা থেকে লতার কন্ঠ শুনে বড় হয়েছি, মা বলেছিল মায়ের ছোটবেলাও লতাজির গান দিয়েই শুরু হয়েছে!’– এমন দৃষ্টান্ত খুব কম শিল্পীর ক্ষেত্রেই দেখা যায়। প্রায় সকলেরই এমন অভিজ্ঞতা কমবেশি আছে। লতা মঙ্গেশকরই সম্ভবত এমন নেপথ্য গায়িকা, যাঁর কন্ঠস্বর ১৯৪৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অগনিত গানের ডালি সাজিয়েছে ও দীর্ঘ ৬ দশকেরও বেশি সময় ধরে অসংখ্য নায়িকার লিপে মোহময় জাদুবিস্তার করেছে।
সুর যদি স্বর্গ থেকেই আগত হয়, তবে সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর নিঃসন্দেহে স্বর্গ থেকেই পৃথিবীতে এসেছেন, নিশ্চয়ই একথায় দ্বিমত পোষণ করবেননা কেউ। ভারতীয় সঙ্গীতের সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর ৯২ বছর বয়সে সেই সুরের জগতেই ফিরে গেলেন। সরস্বতী পূজোর পরের দিন সকাল ৮:০০ টা নাগাদ মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এক মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। প্রথম প্লেব্যাক (নেপথ্য কন্ঠশিল্পী) ১৯৪৮ সালে মজবুর ছবিতে। এরপর অসীম যাত্রাপথ। শচীনদেব বর্মণ,নৌসাদ, খৈয়াম, সলিল চৌধুরী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কল্যাণজি-আনন্দজি, এআর রহমান– এমন অসংখ্য সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন। একের পর এক প্রজন্মকে ভাসিয়েছেন সুকন্ঠের রোম্যান্টিকতায়।
বাবা দীননাথ ছিলেন মঞ্চাভিনেতা। সেই সূত্রে অভিনয় জগতে একবার মাত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেও ওটাই শেষ, কেননা তিনি ছিলেন সঙ্গীতের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তিনি নিজেই বলেছিলেন, “ফিল্মে অভিনয় করি তেরো বছর বয়সে। ওই মেকআপ, আলো, লোকজন , গ্ল্যামার একদম ভালো লাগেনি আমার। তাই আর অভিনয়ের কথা ভাবিনি।”
এরপরই তাঁর সঙ্গীতের জগতে প্রবেশ। উস্তাদ আমন আলি খানের কাছেই প্রথম হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাঠ। এরপর গুলাম হায়দার। তিনিই প্রোডিউসার শশধর মুখোপাধ্যায়ের কাছে নিয়ে যান। ভাবতে অবাক লাগে প্রোডিউসার প্রথমে ‘বড্ড সরু গলা!’ বলে রাজি হতে চাননি! কিন্তু একটা দিন এল, যখন এই কন্ঠশিল্পীই বলিউড প্লেব্যাক গানের জগতে একচ্ছত্র সম্রাজ্ঞী হয়ে উঠলেন। প্রায় অন্তিম লগ্নে ‘অ্যায় মেরে ওয়াতান কে লোগোঁ’ প্রবল দেশাত্মবোধের আবেগ জাগিয়ে এই সঙ্গীতকে চরম সফলতায় পৌঁছে দেন লতা মঙ্গেশকর, যেন স্বয়ং ভারতবর্ষই মূর্ত রূপ হয়ে ফুটে উঠেছে এই গলায়!
২০০১ সালে লতা মঙ্গেশকরকে ‘ভারতরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করা হয়। এছাড়াও পদ্ম বিভূষণ, দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার সহ ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু পুরস্কার এই শিল্পীর জন্য কম পড়ে যায়, তেমনই একটি নিবন্ধই তাঁকে ধরার জন্য যথেষ্ট নয়।
গতমাসেই লতা মঙ্গেশকর কোভিড আক্রান্ত হন। ১১ জানুয়ারি ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হন। নিউমোনিয়াতেও ভুগছিলেন। ফলে শুরু থেকেই আইসিইউতে রাখা হয়েছিল শিল্পীকে। যদিও শেষপর্যন্ত ৩০ জানুয়ারির কোভিড টেস্টে রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। অর্থাৎ কোভিডকেও শেষমেশ জয় করে ফেলেছিলেন লতাজি! হেরে গেলেন কি তবে বয়সের কাছে। ওভার সম্পূর্ণ হলে তো নটআউট ব্যাটসম্যানকেও মাঠ ছাড়তে হয়! তাই নশ্বর দেহ চিরবিশ্রামে চলে গেল আজ সকালবেলায়। অমর হয়ে বেঁচে রইল শিল্পীর কীর্তিভান্ডার। লতাজির গান ছাড়া আর কোথাও তাঁকে খোঁজার উপায় নেই। শিল্পীর অমরত্ব যাত্রার প্রতি ভয়েস ভারত নিউজ-এর অশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ভারতে বেশ কিছু হিন্দু দের দাবি রয়েছে তারা একদিন ভারত কে হিন্দু রাষ্ট্র হিসাবে পরিচয়…
আজও কিছু মানুষের মধ্যে দেখা যায় বর্বরতার। আসামে হাইলাকান্ডির ঘটনা ৪জন কে আটক করে পুলিশ।…
বিজেপির সুফারিশ পেয়ে হলেন মাদ্রাস হাইকোর্টের জাজ! আজকাল কি তবে এই ভাবেই পাওয়া যায় কোনো…
কয়েকদিন ধরেই বেশ তোলপাড় চলছে সংসদ হচ্ছে একের পর এক বৈঠক মুলতুবি। সংসদ ভবন হোক…
রাজ্য জুড়ে চলছে রেশনের ধর্মঘট। জানা গিয়েছে আগামী ৭২ ঘণ্টা কেউ পাবেন না রেশন। কিন্তু…
বলিউডে লাভ বার্ডস দের মধ্যে আরেকটি জুটি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন। শুরু তে এই…