যিনি মুখ খুললে বিপক্ষের মেরুদন্ড টানটান হয়ে যায়, উপস্থিত ক্যামেরা-বুম সব ঘুরে যায় তার দিকে — সেই অনুব্রত কী করেন দূর্গাপূজোয়?
পুজো কেমন কাটান অনুব্রত মন্ডল?
সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অকপট অনুব্রত সোজা সপাট জবাব দিলেন, “পুজোর এই ক’দিন পলিটিক্সের বাইরে”। তবে নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য প্রার্থনা করতে ভোলেননা সেটাও উল্লেখ করেছেন বীরভূম জেলার সভাপতি “চড়াম চড়াম” ডায়লগ ঝাড়া অনুব্রত মন্ডল।
নানুরে পিতৃপুরুষের বাড়ি। সেখানকার দুর্গাপূজোও ৩৫০ বছরের পুরোনো। অনুব্রতর বাবার দাদু নানুর থেকে হাটসেরান্দিতে এসে বসত করেন। সেখানেও দুর্গাপূজা হয়। সে পুজোও কম পুরোনো নয়, প্রায় দেড়শো বছরের কাছাকাছি হতে চলল। পুজোর কয়দিন একটা বড় সময় নিজের দেশের গ্রামের পূজোতেই কাটান অনুব্রত। বোলপুর থেকে যাতায়াত করেন। গ্রামে গিয়ে অসংখ্য গরীব মানুষের হাতে হাতে কম্বল বা বস্ত্র তুলে দেন। অবশ্য এবছর তা বন্ধ। কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কথা ভেবেই যাতে ভিড়ভাট্টা না হয় তাই বন্ধ রেখেছেন।
যারা জানেন তারা বলেন — এমনিতেই খুব সরল আড়ম্বরহীন জীবন কাটান বীরভূমের এই তৃণমূল সংগঠক। দূর্গাপুজোও তাই আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই কাটে। তবে তার সাথে জড়িয়ে থাকে গ্রামের বাড়ির প্রতি, পিতৃভূমির মাটির প্রতি টান।
“মহাসপ্তমী ও অষ্টমীতে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া, ভোগ খাওয়া এই করেই কেটে যায়”। খুব সহজেই বলেন অনুব্রত — যে মানুষটার সাথে ‘সুঁটিয়ে লাল করে দেওয়া’ অনুব্রতর বেশ তফাত নজরে পড়ারই মতো। সপ্তমী থেকে নবমী হয়ে বিজয়া দশমী দেশের বাড়ি হাটসেরান্দি থেকে বোলপুর আসা যাওয়া করতে করতেই দিব্যি কেটে যায়। মায়ের কাছে কি তবে চাওয়ার কিছু নেই? আছে।
মাতৃভক্ত অনুব্রতর চাওয়া এবং দেওয়ার বহর শুনলে অবাক হবেন।
তিনি বলেন, “মাকে ডাকলে সবকিছু পাওয়া যায়। আগেরবার মাকে বলেছিলাম তোমায় একটা সোনার মুকুট দেব। একুশের বিধানসভায় জয় এসেছে। তাই মাকে এবার ২৫ ভরির একটা সোনার মুকুট দেব”।
২০২১ এর বিধানসভায় তৃণমূলের বিজয়ের নেপথ্যে আছে কি তবে মাতৃভক্তর আকুল প্রার্থনা! দলগত প্রাণ অনুব্রতর মানত কিন্তু এখানেই শেষ নয়। নিজস্ব চেনা ভঙ্গিতেই বললেন, “আবার ২০২৪এর জন্য চাইব। মা যদি দেয়, মাকেও দিয়ে দেব”।
এই হলেন অনুব্রত মন্ডল। তিনিই পারেন এমন করে অকপট দেয়া নেয়ার কথা বলতে। মা-ও সে ডাক শোনেন নিশ্চয়ই! অতএব বিপক্ষরা এখন থেকেই সাবধান!