স্মার্টফোন, স্মার্টঘড়ির পর এবার চশমাও হয়ে উঠতে চলেছে ‘স্মার্ট’। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও স্মার্ট প্রযুক্তির
ব্যবহার অন্য গ্যাজেটের মতোই এবার ব্যবহৃত হতে চলেছে আপনার চশমায়।
এখনও পর্যন্ত স্থানীয় মার্কেটে বহুল প্রচারিত না হলেও চমৎকারিত্বে বিশ্ববাজারে ইতিমধ্যেই বেশ সাড়া ফেলেছে ‘স্মার্ট গ্লাস’ । গুগুল, মাইক্রোসফ্ট ইত্যাদি সংস্থার পাশাপাশি এবার স্মার্ট চশমা যৌথভাবে লঞ্চ করতে চলেছে রে-বেন ও ফেসবুক । ২৯৯ ডলারের এই চশমার মাধ্যমে ভার্চুয়াল ও বাস্তব জীবনের সংযোগ আরও পাকা হবে বলেই মনে করছেন মার্ক জুকাইরবার্গ।
পরিস্কার দেখতে সাহায্য করার পাশাপাশি এবার চোখের চশমা অংশ নেবে লাইফস্টাইলের প্রাত্যহিকতায়।
এই চশমা ব্যবহার করলে হাত বাড়িয়ে ঘড়ি দেখার প্রয়োজন নেই। ফোন রিসিভ থেকে গান শোনা সবটাই কন্ট্রোল করতে পারে এই চশমা। পথ চলতে গিয়ে ম্যাপ লোকেশান দেখতে চান? চশমার মধ্যেই দেখতে পাবেন। ছবিও তুলে নিতে পারবে স্মার্ট চশমা। তার জন্য আপনার ‘ নজর কা ইশারা’ই কাফি। তেমনই স্মার্ট সানগ্লাস নির্দেশমতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে চারপাশের আলো। অথবা চাইলে চোখের চশমাতেই দেখতে পাবেন ফেসবুক বা অন্য মিডিয়ার ফিচার, আলাদা কোনো ডিভাইস ছাড়াই!
শুধু পকেটের স্মার্টফোনের সাথে চশমা কানেক্ট করিয়ে নিলে সবটাই সম্ভব।
উন্নত প্রযুক্তির স্মার্ট চশমা সূক্ষ বোতাম অথবা ওয়্যারলেস দুই পদ্ধতেই অ্যাক্টিভিটি চালিত করতে পারে, পাশাপাশি অডিও কম্যান্ডকেও কাজে লাগানো হচ্ছে।
তবে এখনও পর্যন্ত যেসব স্মার্ট চশমা মার্কেটে উপলব্ধ সেগুলো ওজনে ভারি। তাই সেগুলো আরও হাল্কা ও সহজে ব্যবহারযোগ্য করার দিকে চেষ্টা চালাচ্ছে চশমা প্রস্তুতকারীরা। আরও কম দামে, আরও সহজে বহনযোগ্য হয়ে ব্যাপকভাবে বাজারে এলে ‘স্মার্ট গ্লাস ‘ দৈনন্দিন লাইফস্টাইলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখবে সন্দেহ নেই। কিন্তু সুবিধার পাশাপাশি সমস্যাও যে আছে! সমস্যা প্রাইভেসির। আর সে কথা ভেবেই ভুরু কোঁচকাচ্ছেন অনেক নাগরিক।
এই স্মার্ট গ্লাসের প্রথম উদ্ভাবক অবশ্যই গুগুল। ২০১৪ সালেই প্রযুক্তি নির্ভর ‘গুগুল গ্লাস ‘ তারা মার্কেটে আনে। তখন এর দাম ছিল আনুমানিক ১৫০০ ডলার। কিন্তু খুব বেশিদিন বাজারে টেঁকেনি। উঠে যাওয়ার পেছনে কারণ ছিল ওই প্রাইভেসি হ্যাকিংয়ের সমস্যা। যেহেতু এই চশমা দিয়ে কারুর অজান্তেই ছবি তোলা যায়, তাই সেটা অন্যদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করতে পারে। এই সমস্যাকে সামনে রেখেই সেসময় কিছু গবেষক ও সাংবাদিক প্রশ্ন তোলেন। ফলে তখনকার মতো স্মার্ট চশমা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর আবার নতুন করে ফিরে আসে।
গত কয়েকবছরে বিশ্ববাজারে এই চশমার সার্বিক বাজার দর উঠেছিল ছিল ৩.৮ বিলিয়ন ডলার। একটি গবেষণা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী চলতি বছরে সে দর বেড়ে ৯.০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। কাজেই স্মার্ট গ্লাস প্রস্তুতকারকরা প্রাইভেসির প্রশ্নটাকে আপাতত খুব একটা আমল দিচ্ছেন না, বলাই বাহুল্য। তবে শুধু ফ্যাশনেবল লাইফস্টাইল নয়, এই স্মার্ট চশমার প্রযুক্তিগত অন্য উপকারী সম্ভাবনাও রয়েছে বিশেষ করে চিকিৎসার ক্ষেত্রে। রোগীর প্রাথমিক টেস্ট বা ডায়াগোনিসের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তিকে দারুণভাবে কাজে লাগানোর কথাও ভাবছেন গবেষকরা।