একদিকে কলকাতা পুরসভায় একেকটি করে ওয়ার্ডে জয়ের উত্তেজনার পারদ চড়চড় করে উপরে উঠে গেছে, ঠিক তখনই এইসব প্রতিক্রিয়া থেকে দূরে কামাখ্যায় দেবী ধূমাবতীর মন্দিরের চড়া সিঁড়ি ঠেঙিয়ে ওপরে উঠছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই তাঁকে দেখে অঞ্চলের কিছু স্থানীয় মানুষ আনন্দের চোটেই ‘দিদি! জয় শ্রীরাম’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন।
মমতা ধীরস্থির ভাবে তাদের বোঝান “কামাখ্যা মন্দিরে জয় শ্রীরাম বলতে নেই, জয় মা কামাখ্যা বলুন !”
না, সারা দেশে ক্ষমতা বিস্তারের মানচিত্রে অসম তালিকায় থাকলেও, মমতার এদিনের সফরে ছিলনা সরাসরি রাজনীতির যোগ। কামাখ্যায় দেবীর মন্দিরে পূজো দেওয়ার উদ্দেশ্যই গিয়েছিলেন বাংলার মেয়ে মমতা। অসমের বিজেপি সরকারও তাঁকে পূর্ণ মর্যাদায় অভ্যর্থনা জানান।
দুপুরে গুয়াহাটি এয়ারপোর্টে পা রাখতেই সম্বর্ধনার ধূম পড়ে যায়। সবচেয়ে বড় কথা বিজেপি সরকার ও প্রশাসনিক তরফে তাঁর উদ্দেশ্যে ‘গার্ড অফ অনার’-এর ব্যবস্থাও রেখেছিলেন। সলজ্জভাবে আপত্তি করে শুধুমাত্র মাল্যদানই গ্রহন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতার সফরসঙ্গী ছিলেন সুস্মিতা দেব। সৌভাগ্য কুন্ড ঘুরে, গণেশ মন্দিরে নমস্কার জানিয়ে মন্দিরের মূল গর্ভগৃহে পূজো সারেন মমতা। তারপর ধূমাবতী মন্দির হয়ে সবশেষে বগলা মন্দির।
দুপাশে জনস্রোত বিপুল ছিল। ভোটের ফলাফল নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে চাইলে আপত্তি জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তবু যারা যতটুকু সুযোগ পেয়েছেন, কয়েকজন ছবি তুলতে পেরেছেন মাত্র।
অনেকেই ভেবেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেঘালয় সফরে যেতে পারেন। কিন্তু তা হয়নি। কোনও প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক বৈঠক নয়, শুধুমাত্র কামাখ্যায় পূজো দিয়েই ফিরে আসেন তিনি। আসার আগে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং স্থানীয় অধিবাসীদের ধন্যবাদ জানান। কেউ কেউ ‘দিদি! দিদি!’ বলে চিৎকার করে জয়ধ্বনি দিতে শুরু করে দেন। প্রশাসনিক বাধাসত্ত্বেও সাধারণ মানুষের উচ্চকিত কন্ঠস্বর থামানো যায়নি।