উপনির্বাচনে ৪ কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের নিরঙ্কুশ জয় বাস্তবিকই মেনে নিতে পারছেননা শুভেন্দু অধিকারী। এই সাফল্যের পেছনে কারচুপির সরাসরি অভিযোগ তুললেন তিনি।
রবিবার এক সভায় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে প্রশ্ন রেখেছেন, “গোসাবায় সুব্রত মন্ডল, দিনহাটায় উদয়ন গুহ যা ভোট পেয়েছেন, তা কি কোনো দল পায়? ৮৬ থেকে ৮৭ শতাংশ ভোট পায় কেউ? ভোটের মেশিন বদলানো হয়েছে। বেহালা পূর্বের মেশিনের ভোট গোনা হয়েছে গোসাবায়”।
ভোটে হারার এই দুস্তর ব্যবধান নিয়ে জোরালো সংশয়ের পেছনে আরো যুক্তি দেখিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন, শান্তিপুর কলেজ বুথে তৃণমূল ৪৭৮ ভোট আর বিজেপি মাত্র ৮ টা ভোট পেয়েছে। এটা কীকরে সম্ভব? যেখানে ওয়ার্ড সভাপতি, তাছাড়াও ২০ জন কর্মী, তাঁদের বাড়ির লোক মিলিয়ে ৯২ জন, সেখানে ওই ভোটগুলো গেল কোথায়? সাধারণ ভোটারদের বাদ দিলেও গোসাবায় বিজেপির জেলা সভাপতির বাড়িতেই মোট সদস্য ৮ জন , সেখানে মাত্র ১ টা ভোট আসে কীভাবে? শুভেন্দু এই যুক্তিতেই প্রশ্ন রেখেছেন, নেতা কর্মী সমর্থকদের বাড়ির লোকেরা কি তবে বিজেপিকে ভোট দেননি?
এই প্রশ্নগুলোর ভিত্তিতেই ইভিএম পাল্টানোর অভিযোগ তুলছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের কাছে শুভেন্দুর যুক্তি বালকসুলভ বলেই মনে হয়েছে। কেননা সকলেই জানেন কোনো ব্যক্তির কাছে নিজের ভোট সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত এমনকি গোপন ব্যাপার। পরিবারের অন্য সদস্যও আরেকজনের মনের কথা নাই জানতে পারেন! এটাই তো গণতান্ত্রিক নির্বাচন পদ্ধতির রীতি! সেখানে শুভেন্দুর এই প্রশ্ন কিছুটা অপ্রাপ্তবয়স্কদের মতোই শোনায়।
কেউ কেউ আবার শুভেন্দুর এই প্রশ্নের মধ্যেই ‘ম্যানিপুলেশন’-এর আভাস পেয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসম্পাদক কুনাল ঘোষ বলেছেন, “শুভেন্দু নিজের মাথা এবং দৃষ্টিভঙ্গি বদলান। বিজেপির সব কর্মী এবং বাড়ির লোকের ভোট বিজেপিকেই পেতে হবে এটা কে বলল? আর ভোট তো করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন আর কেন্দ্রীয় বাহিনী! সেখানে জানান”।
শুভেন্দুর এই অসংলগ্ন কথার জন্য তাঁর “চিকিৎসার দরকার” বলেও উল্লেখ করেন কুনাল। আরো বলেন , বিজেপির কর্মী সমর্থক পরিবারের লোক যদি তাদের ভোট না দেয় সেটা বিজেপিরই ব্যর্থতা।
কার্যত নিজের বলা কথার প্যাঁচে শুভেন্দু অধিকারী নিজেই বেকায়দায় পড়ে গেলেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশ তাই মনে করছেন।