অভিযোগের পর অভিযোগ। উপনির্বাচনের দিন সকাল থেকেই ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী বুথ জ্যামের অভিযোগের তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে। “১২৬ নম্বর বুথে ভোট শুরু করতে দেওয়া হয়নি। এটা মদন মিত্রের এলাকা!” বলে কটাক্ষ করেছিলেন শুরুতেই। সেই অভিযোগ শান্তভাবেই সামলে নেন ববি, ওরফে তৃণমূলের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
খুব কায়দা করে শ্লেষ মিশিয়ে তিনি বোঝান, “মদন মিত্রের এলাকা বলে এখানে কিছু আছে নাকি? এই পুরোটাই মমতা ব্যানার্জীর এলাকা”। আর তারপরেই যা করলেন ফিরহাদ, এমন ঘটনা সত্যিই বিরল।
নির্বাচন কমিশন সকালের ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিলেও আবার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ — ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় এলাকায় ঘুরে এবং এবং ট্যুইটারে বার্তা পাঠিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন!
এহেন অভিযোগে সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি ট্যুইট করতেই জানেননা। তবে এসব অভিযোগকে এক কথায় গুরুত্বহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে ফিরহাদ হাকিম যা করলেন, তা সমস্ত বিরুদ্ধ অভিযোগকে চুপ করিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
পরিবহন মন্ত্রী, তৃণমূলের এই অগ্রগণ্য সৈনিক নেতা ফিরহাদ হাকিমকে আচমকাই দেখা গেল চেতলায় সিপিআইএমের ক্যাম্পে। কী করছিলেন ওখানে তৃণমূল নেতা?
সংবাদ মাধ্যমেও সহজ সাবলীল ফিরহাদ। এ যেন অতি স্বাভাবিক ব্যাপার! এমন ভাবেই প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন।
হাতে ছিল চায়ের ভাঁড়। ওদিকে ভোটপর্বে ইভিএমে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এদিকে একটু বিশ্রামের পরিসরে , সিপিএম নেতাদের সাথেই বসে চা খাচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম। বললেন,”রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। এখানে এরা সব আমার পাড়ার ছেলে।আমরা বন্ধু”।
সিপিএম পক্ষের নেতারাও চায়ে চুমুক দিয়ে ফিরহাদের কথাতেই সুর মেলান,”আমাদের অন্যরকম রিলেশন। এখানে কোনো রাজনীতি নেই”।
এই ঘটনা দেখে অনেকেই স্তম্ভিত হয়ে গেছেন। বিরোধী পক্ষ থেকে যারা সজোরে আওয়াজ তুলেছিল — ফিরহাদ হাকিমকে ভোট চলমান পর্যন্ত নজর বন্দী করে আটকে রাখা হোক! সেসব দাবি যেন ম্লান হয়ে গেল চেতলায় সিপিএম ক্যাম্পে একসাথে বসে ফিরহাদের চায়ের আসর জমানো দেখে। ভোটাভুটি খেয়োখেয়ি আর নেতা নেত্রীদের বিষোদ্গারের বিপরীতে তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম ভোটের দিনই অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করে দিলেন।