নিজের পদবি নিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের অসমীয়া এক তরুনী প্রিয়াঙ্কা। সামাজিক মহলে তো বটেই, এমনকি চাকুরিক্ষেত্রেও তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। পদবি নিয়ে এমন হেনস্থার কথা আগে শুনেছেন কখনও? আসুন ওই মেয়েটির কথা তাঁর নিজের বয়ানেই জেনে নিন।
পদবি নিয়ে বর্ণভেদ প্রথা নতুন নয়। যেকোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতিতে উচ্চবর্ণের পদবিধারীরাই স্থান পেয়ে এসেছেন বহু ক্ষেত্রেই, এমনটা আমরা জানি। তার বিপরীতে সংরক্ষণ ব্যবস্থাও প্রচলিত, তাও জানি। এখানে সমস্যা তা নয়। সমস্যা হল পদবির ‘ভাষা’ নিয়ে।
আসামের গুয়াহাটির বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কার পদবির সাথে একটি অশ্লীল শব্দের মিল আছে, সমস্যা সেটাই। প্রিয়াঙ্কার পুরো নাম — প্রিয়াঙ্কা **তিয়া।
শুধুমাত্র এই কারণে বরাবর সামাজিক হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তাকে। সম্প্রতি এক নামি প্রতিষ্ঠান তাঁর চাকরির আবেদনপত্র বাতিল করেছে। এমনকি অনলাইনে ফর্ম ফিল আপ করতেও পারছেননা যেহেতু পদবির শেষ শব্দদুটো অশ্লীলতা সূচক।
এই অপমান মেনে নিতে না পেরে ভবিবষ্যত জীবন ও কেরিয়ার নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন প্রিয়াঙ্কা। সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন তাঁর হতাশার কথা। সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচিত অপরিচিত সবাইকে তিনি বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত — এটা কোনো অশ্লীল শব্দ নয়, এটাই তাঁদের সম্প্রদায়ে এই পদবিই প্রচলিত !
বুঝতে অসুবিধা হয়না, প্রিয়াঙ্কাকে কি ধরনের অপ্রস্তুত অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় প্রতি মূহুর্তে।
এমন অনেক পদবিই আছে আপাতভাবে অশালীন মনে হলেও আসলে সেগুলো ‘স্ল্যাং’ নয়। মাল, হাতি, হোড় এমন অনেক পদবিই কিন্তু সমাজে প্রচলিত।
আসলে সামাজিক স্তরভেদে ‘স্ল্যাং’ সম্পর্কে মানুষজনের ধারণা অত্যন্ত কম। তাই এই বিভ্রান্তি। প্রিয়াঙ্কা সমাজ মাধ্যমে মুখ খুলে সমস্ত জানিয়ে আবেদন রেখেছেন যাতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত হয়। প্রতি মূহুর্তে অবিচারের শিকার প্রিয়াঙ্কার আবেদন সবার কাছে পৌঁছে দিয়ে, আমরা হয়তো কিছুটা হলেও অন্যায়ের প্রতিকার করতে পারি!