বর্তমান সময়ে বিশ্ববাজারে ভারতের সাথে প্রতিযোগিতার কথা উঠলেই সবার প্রথমে আমেরিকার নাম আসে, আর তারপরেই আসে চীন। ভারতের এমূহুর্তে আর্থিক , সামরিক ক্ষেত্রে ক্রমশ উন্নয়ন ঘটলেও চীনের থেকে ভারত এখনও অনেকটাই পিছিয়ে। তবে চীনের একটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে দেশের গভীর সমস্যা দেখা দিয়েছে, আর সেই একই কারণে তাকে টেক্কা দিতে পারে ভারত।
জনসংখ্যা। ক্রমশ কমে যাওয়া জনসংখ্যাই চীনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমীক্ষা অনুযায়ী ২০১৯ সালে প্রতি একজন মহিলা প্রতি সন্তান জন্মের হারের সূচক ছিল ১.৭, সেখানে চলতি বছরে তা কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১.৪-এ। এই অনুপাত আগামী দিনে আরো কমে যাওয়ার দিকেই ইঙ্গিত করে যা রীতিমতো চিন্তার কারণ।
বর্ধিত জনসংখ্যা যেমন একটা দেশের অর্থনীতির পক্ষে ভাবনার কারণ, ঠিক তেমনই উল্টোটা অর্থাৎ জনসংখ্যার হ্রাসপ্রাপ্তিও ক্ষতিকারক তো বটেই। যন্ত্র তো আর সবকিছু পারেনা! এত বড় একটি শিল্পসমৃদ্ধ দেশ যা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কর্মী মানুষের প্রয়োজন, অদূর ভবিষ্যতে চীনে তার ঘাটতি দেখা দেবে।
আর ‘ম্যানপাওয়ারের’ ঘাটতির ফলে শিল্পের উন্নয়নও বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
সেদিক থেকে ভারতের চিত্রটা একেবারেই উল্টো। এখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি চিন্তার কারণ। তবে বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যা এখন আগের তুলনায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। আগামী কয়েক বছরে জনসংখ্যা যদি না বাড়ে, তবে তা স্থিতিশীল বলেই মনে করা যেতে পারে। চীনের সাথে প্রতিযোগিতায় শিল্প-উৎপাদন ক্ষেত্রে শুধুমাত্র এই ‘ম্যানপাওয়ারের’ কারণেই কিছুটা এগিয়ে যেতে পারে ভারত, এমন সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে।
‘এক পরিবারে অনধিক দুই সন্তান’ এই নীতির অতি প্রয়োগের ফলেই চীনের জনসংখ্যা অপ্রত্যাশিতভাবে কমে গিয়েছে। সবচাইতে বড় কথা চীনের জণগণ চিন্তাধারায় সংস্কৃতিতে এই ব্যবস্থায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন, যার ফলে এক বা দুইয়ের বেশি সন্তান ধারণে তাঁরা আগ্রহী নন। এদিকে জনসংখ্যা বাড়াতে চীন এখন বদ্ধপরিকর। তাই দুই সন্তান ধারণের প্রচলিত নীতি বিলোপ করার পাশাপাশি সন্তান ধারণ করলে অল্প সুদে ২৩ লক্ষ টাকা লোনের ঘোষণাও করেছে চীন সরকার।
এ যেন উলটপুরাণ। আশ্চর্য না হয়ে উপায় কি!