একসময়ের বিরোধীই কি অন্যসময়ে শাসক ? বরাবরের মতো এবারে আর তা হবেনা, ব্যতিক্রম ঘটবে এমনই তো ভেবেছিলেন পশ্চিমবঙ্গবাসী। তবে শিলিগুড়িতে সাম্প্রতিক এক ঘটনা কিছুটা হলেও প্রশ্ন তুলে দিল? প্রশ্ন জমিহারাদের। জমি ফেরতের দাবি। আর তাতেই গ্রেপ্তার হলেন অনিচ্ছুক জমিদাতারা।
মনে পরে যাচ্ছে কি, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের সেই জমি রক্ষার লড়াই! যে লড়াইয়ে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে ৩৪ বছরের একচ্ছত্র অধিকারী বামফ্রন্ট সরকারের গদি টলিয়ে ২০১১-য় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! হ্যাঁ শিলিগুড়ির প্রসঙ্গে অনেকেরই হয়তো সেই দিনগুলোর কথা মনে উঁকি দিয়ে যেতে পারে।
ওই বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই শিলিগুড়ি মহকুমার অন্তর্ভুক্ত কাওয়াখালিতে ৩০২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। সেই অগ্নিগর্ভ সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীই জমিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছিলেন।
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বেশকিছু অনিচ্ছুক দাতাদের জমি ফেরত দিলেও, সকলে জমি ফেরত পাননি এমনটাই দাবি। শুধু তাই নয়, ওই গৃহীত জমির মধ্যে ৮২ একর কোন এক সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। অনিচ্ছুকরা তাদের জমি ফেরত চান। ওই সংস্থার কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েছিলেন পূজোর আগেই সকলকে জমি ফেরত দেওয়া হবে যদি তারা মামলা তুলে নেন। কিন্তু লিখিত আশ্বাস না থাকায় তারা রাজি হননি।
এদিন সেইসব জমি ফেরত না পাওয়া মানুষেরাই শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর চলার রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হয়েছিলেন।
রবিবার শিলিগুড়ির এশিয়ান হাইওয়ে-২ ধরে মুখ্যমন্ত্রী বাঘাযতীন পার্কের একটি বিজয়া সম্মিলনি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। ওই রাস্তার ধারেই বিক্ষোভকারীরা হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে জমি ফেরতের দাবি জানাতে চেয়েছিলেন। যথারীতি পুলিশ তার অনুমতি দেয়নি, উল্টে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই বাকি আন্দোলনকারীরা শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।
অনিচ্ছুক জমিদাতাদের একজন গোবিন্দ মল্লিক যদিও মমতা ব্যানার্জীর প্রতি আস্থা রেখেছেন। আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জমিহারাদের পাশে রয়েছেন, কিন্তু তাঁদের দাবিগুলো মুখ্যমন্ত্রীর কানে যাচ্ছেনা”। শান্তিপূর্ণভাবে সেকথাই জানাতে চেয়েছিলেন তাঁরা। বাধা পেয়ে আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছেন, “এভাবে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবেনা। আমরা আবার অনশনে বসবো”।