সম্প্রতি ‘News 18 বাংলা’ -র একটি সংবাদ সংক্রান্ত পোস্টের উল্লেখ করে সংবাদ মাধ্যমকে চটি চাটা বলে ট্যুইট করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ট্যুইটে নিউজ চ্যানেলকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন তিনি। এবার সেই ট্যুইটেরই পাল্টা দিয়ে ট্যুইট করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুনাল ঘোষ। শুভেন্দু অধিকারীর অতীত রাজনৈতিক জীবনের তুলনা টেনে কুনাল বলেছেন, ‘চটি চেটেই সাংসদ বিধায়ক’ হয়ে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীও! শুভেন্দু বনাম কুনালের এই ট্যুইট যুদ্ধে বঙ্গ রাজনীতির সামাজিক মাধ্যম সরগরম।
‘চটি চাটা!’ এই শব্দদুটি বিজেপির প্রচলিত একটি অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। বিজেপি বিরোধী যেকোনও সংবাদ দেখলেই তাঁরা ‘চটি চাটা’ বলে মন্তব্য ছুঁড়ে দেন। স্পষ্টতই যা একটি সংবাদ সংস্থার প্রতি অপমানজনক ইঙ্গিত।
গতকাল কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে শুভেন্দু অধিকারীর পুরভোট সম্পর্কিত একটি বিবৃতি দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়। ‘News 18 বাংলা’-র এমনই একটি সংবাদকে আক্রমণ করে ‘চটি চাটা ইলাস্ট্রেটিভ’ বলে কার্যত ভিত্তিহীন, নিন্দনীয়, সাজানো ও হলুদ সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি। সবশেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দেন।
সহজ সাধারণ তথ্যপ্রাপ্ত এই সংবাদে শুভেন্দুর বিবৃতির সূত্র ধরে ই বলা হয়েছিল,’ছোট লালবাড়ি দখলের স্বপ্ন তো দূর অস্ত। বরং বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে পুরভোটে দলকে টার্গেট বেঁধে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।’ তথ্য সূত্র হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর বিবৃতির অংশ তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের নিশ্চিত জয়ের জন্য ১০ টি ওয়ার্ড টার্গেট করতে হবে। এই ১০ টি ওয়ার্ডে আমি নিজে নেতা হিসাবে নয়, সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ করব।” ন্যুনতম ১০ টি ওয়ার্ডে জেতার এই লক্ষ্যকে বিজেপি তাদের ইস্তেহারে ‘মিশন কলকাতা’ নাম দিয়েছে, এবং ‘শুভেন্দু অধিকারী নিজে সরাসরি সাধারণ কর্মীদের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখে নির্দেশ দেবেন’ বলেও সংবাদে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এই সংবাদের বিপরীতে রেগে গিয়ে ‘চটি চাটা’ বলার কারণ কী! সেটা অনেকেরই প্রশ্ন। তবে কি শুভেন্দু অধিকারী দলের ‘ইনসিকিওর’ (Insecure) মনোভাবকেই প্রকাশ করে ফেললেন?
শুভেন্দু অধিকারীর অপমানকর মন্তব্য সম্বলিত এই বিতর্কিত ট্যুইট মেনশন করে রিট্যুইট করেছেন তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক কুনাল ঘোষ। তিনি শুভেন্দুর উদ্দেশ্যে বলেছেন, “চটি চাটা! চটি চেটেই তো সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী, চেয়ারম্যান, দলের পদ, সম্মান, প্রিতষ্ঠা। শুধু নিজের নয়, বাবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব, ভাইদের পদ, পরিবারের তম্বি। বাড়ির সবাই মিলে মোট কটা পদে ছিলে তালিকাটা দাও ভাই। থুতু উপরে ছুঁড়লে নিজের মুখেই পড়ে। রুমাল আছে তো?”
কুনাল ঘোষের এই ট্যুইটে ব্যাপক চটেছে বিজেপি মহল। শুভেন্দু অধিকারী কি এবার নিজের অতীতের রাজনৈতিক জীবনের বিবরণকেও ‘হলুদ সাংবাদিকতা’ বলবেন? সেই প্রশ্নই অনেকে রাখতে চেয়েছেন।