শিক্ষক হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন। তাঁকে শিক্ষক দিবসে প্রণাম জানাতে না পেরে যন্ত্রণায় ভুগছেন এ মূহুর্তের একজন ২০১০ এর সোনাবিজয়ী বিশ্বসেরা তীরন্দাজ দীপিকা কুমারি।
টোকিও অলিম্পিকেও অংশ নিয়েছিলেন দীপিকা। এবছর অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হলেও তিনি বিশ্বচ্যাম্পিয়ান, ভারতের গর্ব। আর এই গর্বের মুকুটটি তিনি পরিয়ে দিয়েছেন তাঁর শৈশবের শিক্ষা গুরুকে।
কোচ ধর্মেন্দ্র তিওয়ারি। মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে যাঁর কাছে তীরন্দাজিতে শিক্ষা শুরু হয়েছিল দীপিকার। আজ সেই শিক্ষক হাসপাতালে রয়েছেন। অস্ত্রোপচারের পর কার্যত তিনি সংজ্ঞাহীন। জীবন সংশয়ও রয়েছে। শিক্ষক দিবসে সেই গুরুকে স্মরণ করে কন্ঠহার উদ্বেগ ঝরে পড়েছে কলকাতায় শ্বশুরবাড়িতে থাকা দীপিকার। “প্রতিবছর যেতে না পারলেও একবার ফোন করি। এবার সেটাও পারা গেলনা। কোচরা তো বাবা মায়ের মতোই হন। উনি না থাকলে আমি কেরিয়ারে এত দূর এগোতে পারতাম না। প্রার্থনা করি স্যার যেন তাড়াতাড়ি সেরে ওঠেন”।
২০০৮ সালে জামশেদপুরে স্যারের কাছে প্রথম তীরন্দাজি শিখতে যান তখনকার ১৪ বছরের মেয়েটা। সেই থেকে ছাত্রীর স্বপ্নই কোচ ধর্মেন্দ্রর স্বপ্ন হয়ে ওঠে। সব ত্যাগ করে ছাত্রীকে তৈরি করতে লেগে যান তিনি। মা বাবাকে ছেড়ে থাকা ছাত্রীকে কোনও অভাব বুঝতে দেননি। সর্বক্ষণ পাশে থেকে সাহস ও উৎসাহ জুগিয়ে গেছেন এই আদর্শ শিক্ষক। প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে পদক জিতে আসার পর বলেছেন, ” জিতেছো, খুব ভালো। এবার পদকের কথা ভুলে যাও। সাফল্যে যেন আত্মতুষ্টি না আসে। সামনে আরও কঠিন পথ। এগিয়ে যেতে হবে”।
স্যারের কথা স্মরণ করেই আজও এগিয়ে চলেছেন দীপিকা, লক্ষ্যভেদের উদ্দেশ্যে। শিক্ষক ছাত্রীর এই আন্তরিক বন্ধনই তো শিক্ষক দিবসে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রেরণা হতে পারে!